ফরিদপুর: ফরিদপুর সদর উপজেলার খলিলপুরে পিতার বিরুদ্ধে লালসার শিকার হয়েছেন কিশোরী কন্যা এমন অভিযোগ উঠেছে। এতে গর্ভবতী হয়ে সম্প্রতী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে ওই কিশোরী। এই ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ বাবাকে গ্রেফতার করেছে।
বুধবার (২২ মে) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের কোতয়ালী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. হাসানুজ্জামান।
অভিযুক্ত বাবার নাম মো. নাছির শেখ (৪৫)। নাছির পেশায় রিক্সা চালক। গত রাতে মামলা দায়ের হলে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে খলিলপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানার উপ পরিদর্শক মাহাবুবুল করীম।
এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিশোরীর মা স্থানীয় একটি জুট মিলে কাজ করে। সেখানে মাঝে মাঝেই থাকে রাত্রিকালীন কাজ করতে হয়। ওই সময়ে বাড়িতে ২ মেয়ে ও বাবা থাকতো। এক কক্ষে দুই মেয়ে অপর কক্ষে বাবা থাকতো। গত ১৫/০৫/২৩ তারিখে যথারীতি সকলে ঘুমালে ওই কিশোরী কন্যাকে ডেকে নিজ কক্ষে নিয়ে যায় বাবা নাছির শেখ। পরে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে ওই কিশোরীকে। এসময় চিৎকার করলে ছ্যানদা (একধরনের ধারালো অস্ত্র) দিয়ে ভয় দেখায় মেয়েকে। এরপরে নিয়মিত চলতে থাকে ধর্ষণ। এক পর্যায়ে কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পরলে বাবাকে জানায় সে। নাছির ওই কিশোরীকে জানায় সমস্যা নাই, ছেলে হলে আমরা পালবানে আর মেয়ে হলে বেইচা দিবানে।
গত ১৫ মে ওই কিশোরীর প্রসব বেদনা উঠলে তাকে ফরিদপুরের মাতৃ মঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ওই দিনই কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় ওই কিশোরী। ওই হাসপাতালেই একজনের কাছে কন্যা শিশুকে বিক্রি করে পরদিন বাড়ি যায় কিশোরী ও তার পরিবার। এসময় এলাকাবাসী বাচ্চা নিয়ে নানা প্রশ্ন করলে জানাজানি হয় ঘটনাটি।
পরে ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক তদন্ত করে। কিশোরীর বিক্রিত কন্যাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেয়। এরপরে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। যেখানে আসামী করা হয় বাবা নাছির শেখকে।
মামলার এজাহার হাতে পেয়ে মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ, একই সাথে গ্রেফতার করা হয় বাবা নাছির শেখ কে।
এদিকে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ভুক্তভুগি ওই কিশোরীর সাথে স্থানীয় আরো দুই ব্যাক্তির সাথে সম্পর্ক ছিল। যদিও কিশোরী ও তার মা বাবাকে আসামী করেছে, কিন্তু পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইন চার্জ মো. হাসানুজ্জামান, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক ভাবে ভিকটিম কিশোরী ও তার মা বাবার কথা বলেছে। আমাদের তদন্ত চলছে, একই সাথে প্রযক্তিগত কিছু তদন্ত হবে। ওই কিশোরী, সদ্য ভূমিষ্ট কন্যা সন্তান ও আসামী নাছিরের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ঢাকা পাঠানো হবে। ডিএনএ রিপোর্ট পেলে নিঃসন্দেহে বলা যাবে কে অপরাধী। আপাতত তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
এসআই