• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

পান চুরির অপবাদে সালিশ বৈঠক, পরদিন ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার


চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি মে ২৯, ২০২৪, ০৮:৪৮ পিএম
পান চুরির অপবাদে সালিশ বৈঠক, পরদিন ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের একটি মাঠ থেকে শফিউদ্দিন (৩২) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৯ মে) সকালে ওই মাঠের একটি লিছু গাছ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শফিউদ্দিন জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের শিয়ালমারি গ্রামের মাঝেরপাড়ার মোহাম্মদ আলী বুড়োর ছেলে। নিহতের পরিবারের দাবি শফুদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। 

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা এলাকার মুড়িতলার মাঠে কৃষি কাজের সময় লিছু গাছে ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, মরদেহের মুখ থেকে বিষাক্ত (ফেনা) জাতীয় কিছুর আলামত পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে পান চুরির অপবাদ দেয়া হয়েছিল। আবার হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। আত্মহত্যা কিনা এটা এখনি বলা যাচ্ছে না।মরদেহের মুখে পয়জনিং জাতীয় ফেনা ছিল। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) ফিঙ্গারপ্রিন্ট সহ যাবতীয় আলামত সংগ্রহ করেছে। আর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে নিহতের বড় ভাই বলেন, গত দুদিন আগে শিয়ালমারি গ্রামের আকবার আলীর ছেলে ইসলাম আলীর পান বরজ থেকে পান চুরির ঘটনা ঘটে। এ চুরির অপবাদ দেয়া হয় আমার ছোট ভাই শফিউদ্দিনকে। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করেন পান বরজের মালিক ইসলাম। সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্য আশাবুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে এদিন বিকেল থেকে আমার ভাইকে খুজে পাচ্ছিলাম না। রাতভর খুজেও তাকে পাইনি। আর সালিশে আমার ভাইকে হাজির করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন তারা। আমি বলি আমার ভাই যেহেতু হাজির হয়নি, তাহলে সে দোষি হতে পারে, তাই একদিন আমাকে সময় দিতে যেন ভাইকে সঙ্গে করে হাজির হতে পারি। এরপর থেকে তারা বিভিন্নভাবে ভাইকে হাজির করার জন্য চাপ দিতে থাকে। পরদিন সকালে শুনছি আমার ভাইয়ের লাশ চুয়াডাঙ্গা শহরের তালতলা গ্রামে একটি লিচুগাছে ঝুলছে। আমার ভাইকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশাবুল হক বলেন, গ্রামের ইসলাম আলীর বরজ থেকে পান চুরি হওয়ায় সেই অপবাদ দেয়া হয় শফিউদ্দিনকে। সে আদৌও চুরি করেছিল কিনা এটার কোন প্রমাণ ছিল না। অভিযুক্ত শফিউদ্দিন হাজির হয়নি তাই সালিশে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাহিদূর রহমান জোয়ার্দ্দার বলেন, কোন ঘটনা ঘটলে গ্রাম আদালত কিংবা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো উচিত। তারা আমাদের না জানিয়েই সালিশের আয়োজন করেছিল। পান চুরির আপবাদ দিয়ে যারা সালিশ ডেকেছিল তারা হয়তো শফিউদ্দিনকে ধরতে গিয়েছিল মনে হয়। আজ সকালে শুনছি তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এটা হত্যা কিনা আত্মহত্যা সেটি পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!