ফেনী : ফেনীর পরশুরামে টানা কয়েক দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন মসলার সঙ্গে পেঁয়াজ, রসুন, আদা হলুদ ও কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক পরশুরাম বাজারের ব্যবসায়ী জানান, বেশির ভাগ মসলা এবং পেয়াজ, রসুন, আদা ও হলুদ আমদানির পরিমাণ কম হচ্ছে এবং ডলারের সংকট থাকায় দ্রব্যমূল্য দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আমদানি ও সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে এটা আশা করছি।
পরশুরাম বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ১৫ দিন আগেও যে আদা বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি দরে, এখন সেই আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকায়। ১৫০-১৭০ টাকা কেজির রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকা কেজি দরে। ৫০-৫৫ টাকা কেজির দরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়, ৫০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায়। ১৫০-১৬০ টাকার হলুদ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৩০ টাকায়।
বাজারে করতে আসা করিম মিয়া বলেন, ‘কি খামু,খন্ডে যামু, এভাবে আর কত দিন চলবে। কোনো কিছুর দাম বাড়লে আর সহজে কমতে চায় না। গত দুই-এক বছর আগে বাচ্চাদের যে দুধ ৫০০ গ্রাম ২২০ টাকায় কিনতে পারতাম বর্তমানে সেই দুধের দাম ৩৮০-৪২০ টাকা। কিছু না কিনলেও আলু কিনে জীবন চলতো। আর সেই আলু প্রতি কেজি ৫৫/৬০ টাকা কিনতে হয়। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষ চলবে কিভাবে? আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’
বাজার করতে আসা সাজ্জাদ হোসেন জানান, কোরবানির ঈদ আসছে। মনে হয় বাজারে আগুন জ্বলছে। ধনি গরীব সবার কম বেশি মসলা দরকার। বাজারে এসে দেখা যাচ্ছে কোনো কিছুর দাম কম নেই। দিন দিন দাম বাড়ছেই!দেখার কেউই নেই। সবাই সবাইকে নিয়ে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ নিয়ে চিন্তা করার মতো কেউই নেই। সাধারণ মানুষের কষ্টের শেষ নেই। না পারে কাউকে বলতে, না পারের সইতে।
ক্রেতা মজনু ও দেবাশীষ জানান, আমাদের দেশে একটা রেওয়াজ আছে নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে, যদি বিশ্ব বাজারে কমে কিন্তু আমাদের দেশে কমে না। ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে আটা, ময়দার দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু হোটেলে রুটি, পরোটা, সিঙ্গারা,পাউরুটি, বিস্কুট এইসব পণ্যের দাম বাড়ছে। আটা, ময়দার দাম কমলেও কমেনি আটা ময়দা থেকে তৈরি কোনো পণ্যের দাম।
তিনি আরও জানান, চিনির দাম বাড়ার সাথে সাথে চা প্রতিকাপ যে দামে বিক্রি হয়েছে। বর্তমান বাজারে চিনির দাম কমলেও কমেনি প্রতি কাপ চায়ের দাম।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও আফরোজ হাবিব শাপলা জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও নজরদারি রাখা হয়েছে। অসাধু কিছু ব্যবসায়ী সরকারি সুনাম নষ্ট করার জন্য চেষ্টায় থাকে। সঠিক প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাব।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :