ঢাকা: দেশের চার জেলায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।শুক্রবার (০৭ জুন) বিকেলে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এসব ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে নওগাঁ জেলার মান্দা এবং পত্নীতলা উপজেলায় ৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলায় ৩ জন, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় ১ জন এবং দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ১ জন রয়েছেন।
বজ্রপাতের ঘটনায় নওগাঁর বদলগাছীতে দুইজন এবং নাটোরে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নওগাঁয় দুটি ছাগল মারা গেছে।
নওগাঁ:
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বজ্রপাতে উপজেলার নাগরগোলা গ্রামে খাদেমুল (৫০) ও গাহন গ্রামে মনিকা (৩৫) নামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে ঝড়বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যান খাদেমুল। এ সময় বজ্রপাত হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এছাড়া মনিকা বাড়ির উঠানে ধানের খড় শুকানোর সময় বজ্রপাত হলে তার মৃত্যু হয়।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজ্জামেল হক জানান, বিকেলে উপজেলার ভোলাম গ্রামে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন শামসুল আলম (৩৪)। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া বদলগাছী উপজেলার ঘাবনা গ্রামে বজ্রপাতে গাছের ডাল পড়ে দুইজন গুরুতর আহত হন। এছাড়া ঘটনাস্থলেই বজ্রপাতে তাদের দুইটি ছাগল মারা যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে ৩ জন হলেন-শিবগঞ্জ ও ভোলাহাট উপজেলার হঠাৎপাড়া এলাকার।
মৃতরা হলেন- শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীডাঙ্গা মহল্লার সুভাস ভকতের স্ত্রী ববি ভকত (৩২), উপজেলার পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণপাঁকা নিশিপাড়ার এরশাদ আলী রাকিবুলের মেয়ে কবিতা খাতুন (৮) ও ভোলাহাট উপজেলার হঠাৎপাড়া এলাকার এসলাম আলীর মেয়ে আমেনা খাতুন (১০)।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, দুপুরে ববি ভকত বাড়ির সামনের একটি আম বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে তিনি মারা যান। অন্যদিকে একই সময়ে টিউবওয়েলের পানি আনতে গিয়ে পাকা ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশিপাড়া এলাকায় কবিতা খাতুন নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলার বড়গাছি গ্রামের হঠাৎপাড়া এলাকার একটি আমবাগানে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে হঠাৎ মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আমেনা খাতুন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নাটোর:
নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের কবরস্থান সংলগ্ন বারনই নদীতে দুপুরের দিকে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মো. কামরুল হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন মো. মজনু (৪০) নামে একজন।
নিহত কামরুল একই উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মো. লুৎফর রহমানের ছেলে। আর আহত মজনু একই গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান আকরামুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া জেলার গুরুদাসপুরে বজ্রপাতে আবেরা বগেম (৪০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবেরা গুরুদাসপুর পৌরসভা শহরের আনন্দ নগর মহল্লার সাদ্দাদ হোসেনের স্ত্রী।
গুরুদাসপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফজলুর রহমান ফজল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
দিনাজপুর:
দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের লালঘাট এলাকায় বজ্রপাতে জুয়েল (১৯) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। নিহত জুয়েল ওই এলাকার গোলজার হোসেনের ছেলে। তিনি আফতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পাশের একটি কালভার্টের ওপরে বসে ছিলেন জুয়েল। এ সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আফতাবগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসাই) সিরাজুল হক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :