• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সাভারে বাড়ির মেঝে খুঁড়তেই মিলল মাথার খুলি, হাড়গোড়


সাভার প্রতিনিধি জুন ১২, ২০২৪, ১১:১৬ এএম
সাভারে বাড়ির মেঝে খুঁড়তেই মিলল মাথার খুলি, হাড়গোড়

ছবি : প্রতিনিধি

সাভার: সাভারের স্বপনের বাড়িতে লাশের সন্ধানে দ্বিতীয় দিনের মত অভিযান শুরু করার প্রায় ৩ ঘন্টা পর একটি মাথার খুলি, হাত ও পায়ের হাড়গোড় উদ্ধার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় মাদক সম্রাট স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুর ২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে সাভার আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার মাদক সম্রাট স্বপনের দ্বিতল বাড়ির নিচতলার মাটি খুঁড়ে লাশের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

এর আগে চলমান অভিযান রাতে স্থগিত করে পুলিশি পাহাড়া বসানো হয়। মঙ্গলবার দুপুর থেকে আবার অভিযান শুরু করে ডিবি পুলিশ। 

মাদক কারবারি স্বপন সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের শাহজাহানের ছেলে। তার সাভারের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। সে সাভারে চিহ্নিত মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত। 

সাভারের আনন্দপুর সিটিলেন এলাকার স্বপনের দ্বিতল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির প্রবেশ পথ বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বাহিরে উৎসুক জনতা ভীড় করলেও ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় ৮ ফুট মাটি খুড়ে লাশের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।

ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন আগে একটি হত্যাকান্ডের তদন্ত করতে স্বপনের সহযোগী সাইফুল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিরুলিয়ার বাড়ির পাশ থেকে সীমা বেগমের মরদেহ মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুলহোতা স্বপনকে গ্রেপ্তার করে তার সাভারের বাড়ির নিচতলার মেঝের নিচে পুঁতে রাখা লাশের তথ্য পায় পুলিশ। সেই লাশের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে লাশের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। ধারনা করা হচ্ছে ১৪ মাস আগে নিখোঁজ হওয়া সাভার পৌরসভার ইমান্দিপুরের সেলামত মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তনুর লাশের হাড়গোড়। 

নিহতের চাচা বরকত মিয়া বলেন, তার ভাতিজা তনুকে স্বপন হত্যা করে পুতে রেখেছিল। হাড়গোড়ের পাশ থেকে তনুর জামাকাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া জামা কাপড় তার ভাতিজার। অপহরণের দিন তনুকে সেই জামাতেই দেখা গিয়েছিল।

পুলিশ জানায়, স্বপনকে মঙ্গলবার সকালে ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়ন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় স্বপনের কাছ থেকে পিস্তল এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য হিরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৪ মাস আগে নিখোঁজ হওয়া তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তনু। গত বছরের ২১ এপ্রিল তারিখে নিখোঁজের বাবা সেলামত মিয়া বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এর আগে গত বছরের ১ঌ এপ্রিল বাসার পাশ থেকে নিখোঁজ হয় তনু। 

অভিযান শেষে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সীমা অপহরণ ও হত্যার সুত্র ধরে সাইফুলকে গ্রেপ্তারের পর সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আজকে সকালে স্বপনকে গ্রেপ্তারের পর দেড় বছর আগের তনু নিখোঁজের ঘটনায় স্বপনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বপন স্বীকার করেছে তনুকে অপহরণ করে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে তনুর লাশটি গুম করার চেষ্টা করেছে তারা। স্বপন একজন নৃশংস সিরিয়াল কিলার, সে মাদক ব্যবসায়ী। মাদকের কারণেই সীমাকে হত্যা করা হয়েছিল, তনুকেও মাদকের কারণেই হত্যা করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সীমা হত্যাকান্ডের সাথে সাইফুল, স্বপন সহ ৫ জনের নাম সামনে এসেছে। তবে তনু হত্যাকান্ডে আর কে কে জড়িত ছিল তা স্বপনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এসআই

Wordbridge School
Link copied!