ফরিদপুর: ফরিদপুরে জীবন্ত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরে বনবিভাগে জমা দেওয়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। এ ঘোষণার পর রোববার ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ জমা পড়ে। তিন সাপ উদ্ধারকারী ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ঘোষিত ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নিয়াজ জামান সজীব।
তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ পুরস্কার ঘোষণা প্রত্যাহার করার আগে যে তিনটি সাপ বন বিভাগে জমা পড়েছে শুধুমাত্র ওই তিন ব্যক্তিকে পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হবে। ফরিদপুর বন বিভাগের বিভাগীয় অফিসে তিনটি জীবিত রাসেলস ভাইপার (বাচ্চা) জমা দেন ফরিদপুর সদরের রেজাউল করিম, আজাদ শেখ ও শাহজাহান খান। তারা ঘোষণাকৃত পুরস্কারের টাকা পাবেন বলে জেলা আওয়ামী লীগ জানিয়েছে। এরই মধ্যে দুইজনকে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কারের চেক তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইসতিয়াক আরিফ।
এদিকে সোমবার বিকালে খুলনার বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ পৌঁছে দেন ফরিদপুর বন বিভাগের প্রহরী মো. জাহিদুল ইসলাম। সাপ তিনটি গ্রহণ করেন ওই কার্যালয়ের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য।
এ বিষয়ে তন্ময় আচার্য জানান, যে তিনটি রাসেল ভাইপার সাপ ফরিদপুর বন বিভাগ থেকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে তার মধ্যে একটি সাপ মারা গেছে।
আরেকটির অবস্থা মৃতপ্রায়। তিনটির মধ্যে একটি সাপ সুস্থভাবে বেঁচে আছে। জীবিত সাপটির বিষয়ে বন বিভাগ খুলনা ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ২০ জুন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তক্রমে রাসেলস ভাইপার সাপ সম্পর্কিত একটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, যা প্রকৃতপক্ষে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থি। বিষয়টি বন ও পরিবেশ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, বিধায় জেলা আওয়ামী লীগ সর্বসম্মতভাবে রাসেল ভাইপার সংক্রান্ত ঘোষণাটি প্রত্যাহার করে নেয়।
জীবিত রাসেল ভাইপার সাপ ধরে বন বিভাগে জমা দিলে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে- জেলা আওয়ামী লীগের এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রোববার যে তিনজন সাপ ধরে বন বিভাগে জমা দিয়েছেন তাদের পুরস্কার বাবদ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইাশতিয়াক আরিফ।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইশতিয়াক আরিফ বলেন, সাপ সম্পর্কিত পুরস্কার ঘোষণাটি আমরা প্রত্যাহার করেছিলাম। প্রত্যাহারের আগে ওই তিনটি সাপ বন বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী তিন ব্যক্তিকে পুরস্কার বাবদ ৫০ হাজার করে টাকা প্রদান করব। এর মধ্যে ২ জনের পুরস্কারের চেক দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, সরিসৃপজাতীয় প্রাণী ধরা বা মারা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সেই আইন অনুযায়ী এভাবে সাপ ধরা এবং সাপ ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করা বেআইনি। এভাবে ধরা সাপ তারা জমা রাখতে বা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে পারেন না। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির কথায় তাদের সাপগুলো জমা নিতে হয়েছে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কথায় প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিতে হয়েছে।
আইএ