• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সোনালি আঁশে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন


মোহাম্মদ আমিনুল হক বুলবুল, নান্দাইল  জুলাই ৩, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
সোনালি আঁশে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

নান্দাইল: ময়মনসিংহের নান্দাইলে কৃষকেরা সোনালি আঁশে স্বপ্ন দেখছেন। অল্প খরচ ও কম সময়ে বেশি লাভ হওয়ায  কৃষকদের মাঝে পাট চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ বছর যাবৎ পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক পাট চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। অনেক কৃষকই বলছেন, পাট চাষীদের সুদিন ফিরেছে। সোনালি আঁশ পাট চাষে তাই কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।

উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিভিন্ন গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ব্যাপকভাবে সোনালী আঁশের আবাদ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১৭৬  হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।এরমধ্যে দেশী, মেসতা, কেনাফ, তোষা (বিজেআরআই রবি ৮)জাতীয় পাট আবাদ হয়েছে বেশী।

 

দেশে সার, বীজ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ কম ও অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সোনালী আঁশের ফলন অধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের হাট-বাজারে পাটের দাম অধিক ও কম খরচে পাটের অধিক ফলন হওয়ায় পাটের সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় পাট চাষীরা এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।

সরেজমিন উপজেলার চরকোমরভাঙ্গা, বীরকামট খালী, লোহিতপুর, চরকামট খালী, হাটশিরা এবং কালিবাড়ির চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকের মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। চারিদিকে পাটক্ষেত। সামান্য বাতাসে দুলছে পাটের সবুজ কচি ডগা। যেন সমুদ্রের ঢেউ দোল খাচ্ছে। দুচোখ জুড়িয়ে যায় পাটের কচি ডগার ঢেউ দেখে। সবুজ পাতার সাথে দোল খাচ্ছে মাঠের পর মাঠ কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।

উপজেলার বীরকামট খালী গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে ৪০ শতক জমিতে পাট চাষ করেছেন তিনি। একই গ্রামের কৃষক শরাফ উদ্দিন বলেন, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মণ। যার বাজারদর সর্বনিম্ন ২০-২৫ হাজার টাকা।

এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাট ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ক্রমশই পাটের দাম বাড়তে থাকে। গতবছর সর্বশেষ ৪ হাজার টাকা মণ পাট বিক্রি হয়েছে। ফলে যারা পাট বিক্রি না করে রেখে দিয়েছিলো তারা বিঘা প্রতি প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা লাভবান হয়েছেন।

পাট চাষী আঃ কাদির, রশিদ, মালেক, শহীদ, শামছ উদ্দিন, হাসিম উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, আলাল, সমেদ আলী জানান, অন্যান্য কৃষি ফসলের তুলনায় পাটের আবাদে খরচ কম হয়। পাটের বাজার দামও বেশি। তাই আমরা এই বছর অধিক জমিতে পাটের আবাদ করেছি।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন,চলতি মৌসুমে নান্দাইলে ১১৭৬  হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে দেখাশোনা করায় ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকি কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেয়ায় তারা আরো বেশী উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে পাট চাষ দিন দিন বাড়ছে।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!