• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

৬ মাসে বরিশালে হাসপাতালগুলোতে ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী


বরিশাল অফিস  জুলাই ৪, ২০২৪, ০৯:২৭ এএম
৬ মাসে বরিশালে হাসপাতালগুলোতে ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী

বরিশাল: বছরের প্রথম ৬ মাসেই ডায়রিয়া সহ নানা ধরনের পেটের পীড়া নিয়ে বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৫৩ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।

অপরদিকে বর্ষার আগমনের সাথে ডেঙ্গুও হানা দিতে শুরু করেছে বরিশাল অঞ্চলে। গত একমাসে বরিশালের সরকারি হাসপাতালেই ১০৬ ডেঙ্গু রোগী ভর্তির খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে সরকারি হাসপাতালেই প্রায় ৩৯ হাজার ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার কথা জানিয়ে ২১৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। মে মাসেও প্রায় দেড়শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল হসপাতালগুলোতে।

অপরদিকে গত এপ্রিলে ১২ হাজার এবং মে মাসে সাড়ে ৮ হাজারের পরে জুন মাসেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৮ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে বরিশারেল সরকারি হাসপাতালে।

তবে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ সাধারন চিকিৎসকদের মতে, বরিশালে যে সংখ্যক ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় বা চিকিৎসা গ্রহণ করে, তার কয়েকগুন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাড়ীতে চিকিৎসা গ্রহণ করছে। ফলে এ অঞ্চলে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব না। তবে সব চিকিৎসকরাই পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়ে অবিলম্বে ডেঙ্গুর বিষয়ে বিশেষ নজরদারী সহ সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সিটি করপোরেশন সহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। তা না হলে পরিস্থিতি গতবছরের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।

গত বছরও বরিশালের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৭২ হাজার ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যে সংখ্যাটা আগের বছর ছিল ৭৭ হাজারেরও বেশী। আর ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সর্বোচ্চ সংক্রমনের মধ্যেও বরিশালে প্রায় ৮০ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য আসেন। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার ডায়রিয়া রোগী সরকারি হাসপাতালে আসায় বছর শেষে সংখ্যাটা সাম্প্রতিক বছরগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।

এদিকে ফেব্রয়ারীর শেষ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মে থেকে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তারা এ ব্যাপারে নজরদারী সহ জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণেরও তাগিদ দিয়েছেন।

অপরদিকে বিশুদ্ধ পানি ও স্যনিটেশন ব্যবস্থার অনেক উন্নতির পরেও ডায়রিয়া প্রবন বরিশাল অঞ্চলে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তবে এর পেছনে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার চেয়ে এখন পথ খাবারের দোকানের নিম্নমানের মুখরোচক খাবারকে দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। বরিশাল মহানগরীতে সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত ও অননুমোদিত পথ খাবারের দোকানের সংখ্যাই এখন কয়েক হাজার। এসব দোকানের নিম্নমানের এবং বাসি ও মুখরোচক খাবার নগরবাসীর পেটের পীড়াকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করে চললেও তা নিয়ে জনসচেতনতার অভাবের সাথে এসব খাবার বিক্রি বন্ধে নগর ভবনের কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ সব ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবিড় কার্যক্রমের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে পথ খাবারের দোকানের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা। পাশাপাশি ডেঙ্গুর একমাত্র বাহন এডিস মশা নিধনেও তিনি অবিলম্বে ‘জিরো টলারেন্স’ নিয়ে সবগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে মাঠে নামার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু সহ যেকোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

ডায়রিয়া চিকিৎসায় বরিশালে ১ হাজার ও ৫শ এম এল-এর  প্রায় ৩০ হাজার ব্যাগ আইভি স্যালাইন ছাড়াও বিপুল সংখ্যক এ্যন্টিবায়োটিক ক্যাপসুল ও মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট সহ সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর মজুতের কথাও জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!