• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সেই আবেদ আলী কুয়াকাটা আবাসিক হোটেলের মালিক!


কলাপাড়া প্রতিনিধি জুলাই ৯, ২০২৪, ১২:০৬ পিএম
সেই আবেদ আলী কুয়াকাটা আবাসিক হোটেলের মালিক!

কলাপাড়া: বিসিএস পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম সদস্য পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন নিজেকে কুয়াকাটা একটি আবাসিক হোটেলের মালিক হিসেবে দাবি করেছেন।

মে মাসের ১৮ তারিখ আবেদ আলী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে কুয়াকাটায় তার মালিকানাধীন সান মেরিনা নামের আবাসিক হোটেল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন এমন একটি স্ট্যাটাস দেন। ইতিমধ্যে তার স্ট্যাটাসটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

সেখানে তিনি লিখেন,‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পারে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একই সাথে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’

এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে হোটেল সান মেরিনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ৪০ শতাংশ জায়গার উপর টিনসেট ২ টি ছোট ভবনে মাত্র ৬ টি রুম দিয়ে চলছে হোটেল সানমেরিনার কার্যক্রম। সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘেরা রয়েছে চারপাশ। ভিতরে বহুতল কোনো ভবনের নির্মাণকাজ এখনো শুরু হয়নি।

হোটেলের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার ফারুক হোসেন বলেন,“আমি বিগত ৮ বছর ধরে এখানে চাকরি করছি। আবেদ আলী নামে আমাদের কোনো মালিক নেই। গত ৩/৪ মাস আগে তিনি একদিন আমাদের হোটেলে এসে শেয়ার কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলে আমি তাঁকে ঢাকা হেড অফিসে যোগাযোগ করতে বলি। ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারলাম তিনি এই হোটেলের মালিক। আমাদের হোটেল সান মেরিনার মালিকের নাম মোশাররফ হোসেন, তিনি একজন ঠিকাদার। হোটেলের শেয়ার বিক্রি করার জন্য কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছিল, আবেদ আলী সেই সাইনবোর্ড এর ছবি তার ব্যক্তিগত আইডি তে দিয়ে নিজেকে মালিক হিসেবে দাবি করেছেন। এমনটি কেনো লিখেছেন সেটা আমার জানা নেই।"

আবেদ আলীর ভাইরাল হওয়া স্ট্যাটাস নিয়ে হোটেল সান মেরিনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান,“আমি আবেদ আলী নামের এই লোককে চিনি না, তারসাথে আমার কখনো দেখা হয়নি। আমি সানমেরিনা হোটেলের মালিক, ২০১০ সালে ৪০ শতাংশ জায়গা আমি কিনি এবং ব্যাংক লোন এর জন্য চেষ্টা করছিলাম। বেশ কয়েক মাস আগে হোটেলের শেয়ার বিক্রি করবো এ জন্য একটি সাইনবোর্ড দিয়েছিলাম। আবেদ আলী সেই সাইনবোর্ড এর ছবি ফেসবুকে দিয়ে মালিক দাবি কেনো করেছেন সে বিষয় আমি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আমার ম্যানেজারের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ৩/৪ মাস আগে আবেদ আলী হোটেলের শেয়ার কেনার বিষয়ে কুয়াকাটা অফিসে যোগাযোগ করেছিলেন। শেয়ার কিনতে এসে তিনি নিজেকে মালিক বলে ফেসবুকে পরিচয় দিয়েছেন।"

ইতিমধ্যে হোটেল সান মেরিনা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন সানমেরিনা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াতে চান না দেখেই আবেদ আলীর মালিকানা অস্বীকার করছেন বা গোপন রাখার চেষ্টা করছেন।

প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম সদস্য সৈয়দ আবেদ আলী সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বোতলা গ্রামের মৃত আবদুর রহমান মীরের ছেলে। ঢাকায় তার ৭ তলা এবং ১১ তলা বিশিষ্ট দুটি বাড়ি রয়েছে।৭১ শতক জমিতে মসজিদ এবং ঈদগাহ করেছেন তিনি,নিজ এলাকায় বাড়ি করেছেন প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ করে। মাদারিপুরের ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছেন আবেদ আলী।

৮ জুলাই সৈয়দ আবেদ আলী সহ প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!