মেহেরপুর: আগে ফুলকপি ও বাঁধাকপি পেতে শীতের অপেক্ষা করতে হতো। এখন সব মৌসুমেই গাংনীতে চাষ হচ্ছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। বারমাসই সবজি চাষ করছেন গাংনীর সাহারবাটি ইউনিয়নের কিতারুল ইসলামসহ অনেকেই। প্রায় ১০ থেকে ১২ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করছেন।
সবজি চাষ করে এখন তিনি স্বাবলম্বী। শুধু কিতারুল নয় এই গ্রামের এক হাজার চাষী বারমাস সবজি চাষ করছেন। সবাই এখন স্বাবলম্বী। বিশেষ করে গাংনী উপজেলার সাহারবাটি, গাড়াডোব, যুগিন্দা, আযান, মাইলমারী, হিন্দা, নওপাড়া, ধলা, কাথুলি সহ বিভিন্ন মাঠে বার মাসই সবজি মিলছে। এসব মাঠের সবজি প্রতিদিনই অর্ধশত ট্রাক সবজি ঢাকা, চিটাগাং, সিলেট ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে যাচ্ছে।
বর্তমানে গাংনীতে ১ হাজার ৮৮৫ হেক্টর জমিতে বারমাস সবজি চাষ হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে ফুলকপি-বাঁধাকপি চাষে খরচা পড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপি পাওয়া যায় ৬ হাজার এবং বাঁধাকপি পাওয়া যায় ৫ হাজার। খরচ বাদ দিয়ে মাত্র ৬০ থেকে ৭৫ দিনে ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করছেন চাষীরা।
তবে বারমাস সবজি পেতে বাড়তি পরিচর্যা করতে হয় চাষীদের। পোকা-মাকড় থেকে সবজি রক্ষা করতে করতে প্রতিদিন সার-বিষ প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি সপ্তাহে একবার সেচও প্রয়োগ করতে হয়। সামার ডায়মন্ড, ম্যারাডোনা, ম্যাগনেট-১২সহ বিভিন্ন জাতের ফুলকপি-বাঁধাকপি চাষ হচ্ছে।
সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন কোম্পানি বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে ফসল কাটা পর্যন্ত সাহায্য সহযোগিতা করছে এসব চাষীদের। বারমাস সবজি চাষের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে।
সাহারবাটী গ্রামের সবজি চাষী বাবলু হোসেন বলেন, আগে শুধু শীতকালে সবজি চাষ করতাম। শীতের সবজি গরমে হবে ভাবতেও পারিনি। এখন বারমাস সবজি চাষ করছি। বিভিন্ন কোম্পানি ফুলকপি-বাঁধাকপির চারা (বীজ) তৈরি থেকে শুরু করে সব কাজে সাহায্য করছে। কিভাবে চাষ কাজ করতে হয় আমরা ট্রেনিং (প্রশিক্ষণ) নিয়েছি। প্রথমে তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি।
এখন ১২ থেকে ১৩ বিঘা জমিতে প্রতিবছর সবজি চাষ করছি। মাত্র ৪৫ থেকে ৬০ দিনে ফুলকপি জমিতে থেকে কাটা যায়।’ এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, বারমাস সবজি উৎপাদন করতে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। গাংনী তথা মেহেরপুরের কৃষি জমি খুব উর্বর। সারাবছর জমিতে নানা ধরণের ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। নিবিড় পরিচর্যা করার কারণে চাষীরা লাভবান হচ্ছে।
এআর