• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
সন্তান সাজিয়ে কোটায় চাকরি

বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা


বগুড়া প্রতিনিধি জুলাই ১৩, ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বগুড়া: বগুড়ার সোনাতলার রাণীরপাড়ার ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ ও সাবেক উপজেলা কমান্ডার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে সাতজনকে সন্তান সাজিয়ে তাদের কোটায় চাকরি পাইয়ে দিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

দুদকের বগুড়া জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা তাকে প্রধান আসামি করে তিন সন্তানের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক তিনটি মামলা করেছেন। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তিনজনকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে দুদক বগুড়া কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম (৭২) বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাণীরপাড়া গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। তিনি সোনাতলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার। রফিকুল ইসলাম ও রেবেকা সুলতানা দম্পতির দুই মেয়ে রাশেদা আকতার ও মোরশেদা আকতারের বিয়ে হয়েছে। রফিকুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার জন্য স্থানীয় কয়েকজনের সন্তানকে নিজের দেখিয়ে তাদের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি ও অন্যান্য সুবিধার ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে সাতজনের নাম পাওয়া গেলেও তিনি তার সনদপত্র ব্যবহার করে আরও অনেককে সরকারি চাকরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন।

তার ‘বানানো’ সন্তানরা হলেন- দুই ভাই আহসান হাবিব হান্নান ও জিয়াউর রহমান, বেলাল হোসেন, ফরহাদ হোসেন, সালেক উদ্দিন, রাকিব হাসান ও মৌসুমী আক্তার।

এর মধ্যে হান্নান ও জিয়াউরের প্রকৃত বাবা সোনাতলার দক্ষিণ রানীরপাড়ার জাফর আলী। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের পরিচয় ব্যবহার করে হান্নান পুলিশে চাকরি নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা জেলা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত। একইভাবে অপর ভাই জিয়াউর পেয়েছেন সারের ডিলারশিপ।

অন্যদিকে বেলালের আসল বাবা ক্ষিতারেরপাড়া এলাকার জবেদ আলী। তবে কোটা ব্যবহার করে বেলাল ২০০১ সাল থেকে পুলিশের চাকরি করছেন। তার বর্তমান কর্মস্থল ঢাকা মহানগর পুলিশ।

ফরহাদ হোসেনের প্রকৃত বাবা একই এলাকার জাহিদুল ইসলাম। তবে রফিকুলের মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে ফরহাদ চাকরি নিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসে। একইভাবে রফিকুলের সনদ ব্যবহার করে ক্ষিতারেরপাড়ার নায়েব আলীর ছেলে সালেকও পুলিশ কনস্টেবল হয়েছেন।

একইভাবে রফিকুলের সনদ ব্যবহার করে সোনাতলার জুমারবাড়ী এলাকার মৌমিনুল ইসলামের ছেলে রাকিব চাকরি নিয়েছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরে। আর ভাতিজি মৌসুমী আক্তারকে নিজের মেয়ে সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি করেছেন সরকারি আজিজুল হক কলেজে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, তার দুটি মেয়ে রয়েছে। এরপরও তিনি দুই ভাতিজা বেলাল হোসেন ও ফরহাদ হোসেন এবং ভাগ্নে আহসান হাবিবকে সন্তান হিসেবে লালন-পালন করেছেন। তিনি তাদের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। অন্য আর কাউকে কোটায় চাকরি বা অন্য সুযোগ সুবিধার দেননি। কাউকে কলেজ ভর্তিতে সহযোগিতা করেননি। কিছু মানুষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি দুদকের ওইসব মামলা আদালতে মোকাবেলা করবেন।

দুদক বগুড়া কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তান সাজিয়ে কোটায় চাকরি দিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও তিন কথিত সন্তানদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। অন্য অভিযোগের ব্যাপারেও তদন্ত চলছে।

আইএ

Wordbridge School
Link copied!