চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে দিদারুল আলম নামে এক শ্রমিক লীগ নেতার নির্দেশে বিআরটিসি'র চারটি বাসে আগুন দেয় লেগুনা চালক সোহেল রানা (৪০)। এ জন্য চার লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে মৌখিক চুক্তি হয় তাদের। একইসঙ্গে ঘটনার ১০ ঘণ্টা আগে ৫০০ টাকা অগ্রিম পরিশোধও করেন ওই শ্রমিক লীগ নেতা।
গ্রেপ্তারের পর গত মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জুনাইদের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে একথা স্বীকার করেছেন লেগুনা চালক সোহেল রানা।
এর আগে গত ২০ জুলাই দিবাগত মধ্যরাতে কারফিউ জারির মধ্যে চট্টগ্রামে নতুনপাড়া বিআরটিসি বাস ডিপোতে চারটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ডিপো ম্যানেজার জুলফিকার আলী হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে লেগুনা চালক সোহেল রানাকে শনাক্ত করে। ২২ জুলাই নগরের অক্সিজেন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল রানা পুলিশকে জানান, বিআরটিসি'র ডিপোয় ঢুকে বাসে আগুন দেওয়ার বিনিময়ে তাকে চার লাখ টাকা দিতে চেয়েছেন শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলম। এজন্য তাকে অগ্রিম ৫০০ টাকা দেন দিদারুল। সোহেলের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়ে একইদিন নগরের বালুচরা এলাকা থেকে দিদারুল আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার এস আই রহমত উল্লাহ জানান, ঘটনার সময় বিআরটিসির ডিপোর ক্লিনিং শেডের পাশে থাকা একটি বাসের সিটের ফোম ছিঁড়ে তাতে ব্রেকের অয়েল লাগিয়ে দিয়াশলাই দিয়ে চারটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেন সোহেল। এরপর দেয়াল টপকে পালিয়ে যান।
বুধবার (২৪ জুলাই) গ্রেপ্তার শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতে পাঁচদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তবে এখনো রিমান্ড শুনানি হয়নি। দিদারুল ২০২৩ সালে রুবেল নামে বিআরটিসির এক ঠিকাদারকে হত্যা মামলার আসামি বলেও জানিয়েছেন হাটহাজারী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন।
এদিকে পুলিশ ও বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ চারটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলে সরেজমিন দেখা গেছে, চারটি নয়; দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আগুনে একটি বাসের সাতটি সিট, অপরটিতে শুধু চালকের আসনটি পুড়ে গেছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের নতুনপাড়া এলাকায় বিআরটিসি ডিপোটি অবস্থিত। সেখানে ৯৬টি সরকারি বাস রয়েছে।
এমটিআই