• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের উপকূল প্লাবিত


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম
মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের উপকূল প্লাবিত

লক্ষ্মীপুর: পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলের বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৭ ফুট বেশি জোয়ারে নদী এলাকা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের লোকালয় পর্যন্ত প্লাবিত হয়।

বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। রাত ৮টার দিকে ভাটায় নামতে শুরু করে জোয়ারের পানি। কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, বলিরপোল, মতিরহাট, কালকিনি ও কালভার্ট এলাকায় খোঁজ নিয়ে জোয়ারের বিষয়টি জানা গেছে। একইভাবে সোমবার (২২ জুলাই) ও মঙ্গলবারও (২৩ জুলাই) উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদী সংলগ্ন রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার বিস্তির্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। লোকালয়েও জোয়ারের পানিতে তীব্র স্রোত দেখা যায়৷ এতে রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও কাঁচা-পাকা নিচু ঘরগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। 

এদিকে টানা তিনদিন জোয়ারে উপকূল প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ জোয়ারে ক্ষেতের বীজতলা নষ্টসহ ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। হাঁস-মুরগিসহ গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়ছেন গৃহস্থরা। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ধীরগতিতে মেঘনা নদীর তীররক্ষা বাঁধের কাজ চলছে। তিন বছর শেষ হতে চললেও বাঁধের দৃশ্যমান কিছু দেখা যাচ্ছে না। এতে রামগতি-কমলনগরের প্রায় ৩৭ কিলোমিটার অরক্ষিত উপকূলীয় এলাকা প্রতিবছরই জোয়ারে ভাসে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রিমাল এ উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে। যার ক্ষতচিহ্ন এখনো উপকূলে দৃশ্যমান। এরমধ্যে পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত হয়ে ক্ষেতের বীজতলা নষ্ট ও পুকুরে চাষের মাছ ভেসে গেছে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ হলে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেত উপকূলের বাসিন্দারা। 

কমলনগরের চরমার্টিন এলাকার বাসিন্দা জালাল আহমেদ, আব্দুজ জাহের, আবু তাহের জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের পুরো বাড়ি ডুবে ছিল। নিচু ভিটির ঘরের ভেতরে পানি ঢুকেছে। সবাইকে চৌকি-খাটে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে ছিল। ক্ষেতে অনেকেই আমনের বীজতলা তৈরি করেছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। দিনে ও রাতে প্রতিদিন দুই বার জোয়ার ওঠে। রাতের জোয়ারে হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। খাঁচার ভেতরে থাকা অনেকে মুরগি পানিতে ডুবে মারা গেছে।

কমলনগরের চরলরেন্স এলাকার স্কুলশিক্ষক সানা উল্লাহ সানু বলেন, নদীর স্বাভাবিক জোয়ার উপকূলে প্রবেশ করে না। কিন্তু স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৭ ফুট বেশি জোয়ার ছিল। এতে নদী থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পূর্বে লোকালয় পর্যন্ত তীব্র স্রোত নিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। প্রতি বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢোকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ বছর অসময়ে (আগাম) জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হয়েছে। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!