• ঢাকা
  • রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

কোটা সংস্কার আন্দোলন

মাদারীপুরে দেড় শতাধিক সিসি ক্যামেরা ধ্বংস


মাদারীপুর প্রতিনিধি জুলাই ২৮, ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
মাদারীপুরে দেড় শতাধিক সিসি ক্যামেরা ধ্বংস

মাদারীপুর: কোটাবিরোধী আন্দোলনে মাদারীপুরের দেড় শতাধিক সিসি টিভি ক্যামেরা ধ্বংস করে দেওয়ায় চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ভয়ে আতঙ্কিত জেলাবাসী। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত। জনসাধারণের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়কে বসানো অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা গত ১৮ জুলাই ক্যামেরা নষ্ট করে। এদের নাশকতার হাত থেকে বাদ যায়নি জেলা জজ আদালতের সামনে এবং এলজিইডি অফিসের মূল ফটকে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরাও।

এছাড়া একইভাবে নষ্ট করা হয়েছে শহরের পুরানবাজারে এক ডজনসহ দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। এখানকার কোনটির বক্স আছে তো ক্যামেরা নেই, আবার কোনটির ক্যামেরা আছে বক্স নেই। এমন অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন শহরবাসী। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় আছেন ব্যবসায়ীরাও। এসব সিসিটিভি ক্যামেরা দ্রুত সংস্থাপনের দাবি তাদের।

জানা গেছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১৮ ও ১৯ জুলাই (বৃহস্পতি ও শুক্রবার) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। 

তেলের পাম্প, সার্বিক বাস ডিপো, পুলিশ ফাঁড়ি ও পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিটি সেন্টারে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। এসব ঘটনাকে আড়াল করতেই নষ্ট করা হয় সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো।

৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৬০টি অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয় মাদারীপুর শহরের ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় চলতি বছরের ২৯ মে এর উদ্বোধন করেন মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।

মাদারীপুর বনিক সমিতির নেতা ও বিশিস্ট ব্যবসায়ী গোলাম আজম বলেন, পুরো শহর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিলো। কিন্তু দুর্বৃত্তরা এই ক্যামেরাগুলো নষ্ট করার কারণে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ক্যামেরাগুলো সচল না থাকায় শহরে আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। তাই নষ্ট হওয়ায় সব ক্যামেরা দ্রুত চালু করা প্রয়োজন। এতে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা ও রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারবে।

মাদারীপুরে জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এই ক্যামেরাগুলো দ্রুত সংস্থাপন করা উচিত। তা নাহলে নাশকতাকারীরা পুনরায় বিভিন্ন স্থানেহামলা করতে পারে। মোড়ে মোড়ে ক্যামেরা চালু থাকলে দুর্বৃত্তরা ভয়ে থাকবে, এতে কমবে অপরাধমূলক অন্যান্য কর্মকাণ্ড।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং প্রধান মো. মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, ক্যামেরাগুলো স্থাপনের পর শহরে অপরাধ কমেছিলো। অপরাধীদের ধরতে সহায়ক হিসেবে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলো ক্যামেরাগুলো। নাশকতাকারীরা তাদের অপরাধ ঢাকতে পরিকল্পিতভাবে সব ক্যামেরা নষ্ট করেছে।

যদিও নষ্ট করার আগে তাদের ছবি রেকর্ড হয়ে আছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. শফিউর রহমান জানান, দুষ্কৃতকারীরা ক্যামেরাগুলো ধ্বংস করেছে। ধ্বংস করার আগের মুহূর্তের ফুটেজ থেকে তাদেরকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। এসব অপরাধীকে সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে চলছে অভিযান। আর নষ্ট হওয়া ক্যামেরাগুলো দ্রুত পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মাদারীপুরে দুদিনের আন্দোলনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী, ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে ৩ জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় শতাধিক।

এআর

Wordbridge School
Link copied!