চাঁদপুর : কী অপরাধে কারা এমনে আমার মেয়েটাকে মারল। তাকে নিয়া অনেক আশা ছিল। আমার সব আশা শেষ। আমি এখন কী নিয়া বাঁচুম?
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানী ঢাকায় সহিংসতা সময় গুলিতে নিহত স্কুল শিক্ষার্থী নাইমা সুলতানার (১৫) মা আইনুন্নহার বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন।
১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরার ৫ নম্বর সড়কে ভাড়া বাসার চার তলার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় নাইমা। সে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে দশম শ্রেণিতে ছাত্রী ছিল।
নাইমা চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার আমুয়াকান্দা গ্রামের হোমিও চিকিৎসক গোলাম মোস্তফার মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সে মেজ।
নাইমার বড় বোন তাসফিয়া সুলতানা ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।
তার ছোট ভাই আবদুর রহমান ঢাকার উত্তরা এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
আইনুন্নাহার বেগম তিন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঢাকার উত্তরার ৫ নম্বর সড়কের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। বাবা গোলাম মোস্তফা গ্রামের বাড়িতে থাকেন।
নাইমার বাবা গোলাম মোস্তাফা বলেন, আশা ছিল মেয়েটিকে চিকিৎসক বানাব। এখন সব শেষ। মেয়ে হারানোর শোকে আমরা সবাই মুহ্যমান। কার কাছে বিচার চাইব। বিচারের ভার উপরওয়ালার হাতে ছেড়ে দিলাম।
তিনি জানান, ১৯ জুলাই বিকাল ৫টায় তার বাসার পাশে গোলাগুলি চলছিল। নাইমা সে সময় তা দেখার জন্য ঘরের বারান্দায় গিয়ে উঁকি মারে। হঠাৎ একটি গুলি এসে তার মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে সে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে।
সেখান থেকে স্বজনরা তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ২০ জুলাই পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
মতলব উত্তর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে আমুয়াকান্দা গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া বেড়িবাঁধের ‘ওয়াপদা’র খানিকটা পশ্চিম দিকে হাঁটলেই নাইমার গ্রামের বাড়ি।
বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি থামছেই না। স্বজনদের শোক ও আহাজারিতে ওই এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
নাইমার ফুফাতো ভাই মো. ফাহিম মোর্শেদ বলেন, নাইমা খুব মেধাবী ও বিনয়ী ছিল। এ জন্য এলাকার সবাই তাকে স্নেহ করতো, ভালোবাসতো। তার এ অকাল মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউই।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :