নরসিংদী : আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার ছেলে মারা গেছে বিজিবির গুলিতে। আমি চাই কোনো আন্দোলনে যেন আর কোনো মা-বাবার বুক খালি না হয়— কথাগুলো বলছিলেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার দুলালকান্দি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাছেন আলী।
রাজধানীর রামপুরায় কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৬)।
রোববার (২৮ জুলাই) এভাবেই নিজের কষ্টের কথা জানাচ্ছিলেন হাছেন আলী।
পরিবারের সদস্যরা জানান, আরএম মাল্টিমিডিয়া নামে একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন রাসেল। রামপুরায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি।
গত ১৯ জুলাই স্থানীয় মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার পথে বুকে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পাশের একটি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষের সময় বিজিবির গুলিতে রাসেল নিহত হন বলে দাবি করেন স্বজনেরা।
রাসেলকে গত ২০ জুলাই নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। তবে এক সপ্তাহেও পরিবারের শোক কাটেনি। সরেজমিন তাঁর গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর দুলালকান্দিতে দেখা যায়, বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। এখনও মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা।
রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাছেন আলী বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বাড়িতে ফিরে শুনি আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তার পকেটে থাকা মোবাইল থেকে অপরিচিত একজন কল করে জানায়, আমার ছেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে ছেলের স্ত্রী, আমার আরেক ছেলে এবং মেয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। সেখানে তারা জানতে পারে, বেলা ৩টার দিকে সে মারা গেছে।
রাসেলের বোন হাসনাত রেহেনা বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যায়। তবে গিয়ে দেখি ভাই আর বেঁচে নেই। তাঁর বুকের বাঁ পাশে গুলি লেগেছিল।
এমটিআই