• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩০

বরিশালে সংঘর্ষে আ.লীগ নেতা নিহত, বিআরটিসি বাসে আগুন


বরিশাল প্রতিনিধি আগস্ট ৪, ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
বরিশালে সংঘর্ষে আ.লীগ নেতা নিহত, বিআরটিসি বাসে আগুন

বরিশাল: সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বরিশাল নগরীর করিম কুটির ও চৌমাথা এলাকা। ওই এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হন। নিহত টুটুল চৌধুরী নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

এ ছাড়া পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর ভবন এবং অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। রোববার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষে বিপুলসংখ্যক সাউন্ড গ্রেনেড, গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। নগরীর সদর রোডে বিএনপি কার্যালয়ের তিনতলা ভবন ও ২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।

এদিকে, বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা বেলা ১১টা থেকে দখলে রেখেছে আন্দোলনকারীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগদান করেন বিএনপি ও চরমোনাইসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

রোববার বেলা ১১টায় প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপির বাসভবনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার বাসার ভেতরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া প্রতিমন্ত্রীর বাসার সামনে থাকা অর্ধশত মোটরসাইকেলে। বিষয়টি জানার পর নেতাকর্মীরা ওই বাসার দিকে এগিয়ে আসলে সংঘর্ষ বাধে এ সময় নিহত টুটুল চৌধুরী পেছন থেকে ধাক্কায় সড়কে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাতের পর আঘাত হানে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর ওই স্থান ঘিরে রাখে পুলিশ ও বিজিবি। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধলে বিপুলসংখ্যক সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ালশেল ও গুলিবর্ষণ করা হয়। বিপরীতে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

নিহতের সরঙ্গ থাকা মো. ইকবাল বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে তারা কেউ ছাত্র নয়। তারা সকলেই ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী।’ তার অভিযোগ বিএনপি-জামায়াত শিক্ষার্থীদের ভেতর প্রবেশ করে টুটুল চৌধুরীকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনে আগুন প্রতিহত করতে আমরা এগিয়ে আসলে এ হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে টুটুল চৌধুরী সড়কে পড়ে গেলে বারবার আঘাতে তার হত্যা নিশ্চিত করা হয়।’ এ ছাড়া নগরীর সদর রোডে বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় অফিসের সামনে থাকা দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এ ব্যাপারে বরিশালের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীন অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ আগুন দিয়েছে। আগুন দিয়ে এ আন্দোলন দমানো যাবে না। শিক্ষার্থীদের পাশে সকল তাদের সংগঠন রয়েছে।’ সকল হামলা-আগুন প্রতিহত করবে বলে জানান তিনি।

তবে বিএনপি কার্যালয়ে কে আগুন দিয়েছে তা জানা নেই মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীরের। তিনি বলেন, তারা নিজেরাই নিজেদের কার্যালয়ে আগুন দিয়ে ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে।’

একই সময় চৌমাথা এলাকায় ৫টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশবাহী একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় ২২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে।

অপরদিকে, বেলা ১১টা সরকারি বি এম কলেজ প্রধান গেটে জড়ো হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা অবরোধ করেন। সেখানে পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে জড়ো হয় বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অবরোধের পর থেকে মহাসড়কে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ৬টা থেকে কারফিউ শুরু হলেও সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ১টি বিআরটিসি বাস আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বরগুনার আমুয়া থেকে আসা বাসটি বরিশাল ডিপোতে যাচ্ছিল। পথে বরিশাল নগরীরতে আমতলার মোড়ে আন্দোলনকারীরা হামলা চালিয়ে এতে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

পরে আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসলে তাদের ঘটনা স্থানে প্রবেশ প্রবেশ করতে বাধা দেয়। 

কারফিউ শুরুর আগেই শহরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট ও শপিংমলগুলো। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কাউকেই বাইরে বের হতে দেখা যাচ্ছে না। 

সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনান্য সদস্যরা সর্তক অবস্থায় রয়েছে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!