বরগুনা: বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির সহ ৬ আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও চাঁদা নেয়ার অভিযোগে বরগুনা থানায় মামলা করেছে বরগুনা পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক। বৃস্পতিবার (১৫ আগস্ট) মামলাটি এজাহার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির কে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামি হলেন মিজানুর রহমান ওরফে দালাল মিজু পিতা মৃত মতিউর রহমান সাং পশ্চিম কলেজ সড়ক, (৩) গোলাম মোস্তফা কিসলু পিতা মোঃ শামসুল হক সাং দক্ষিণ বরগুনা, (৪) শাহ মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ পিং রুস্তম হাওলাদার সাং দক্ষিণ বরগুনা (৫) গোলাম কিবরিয়া পিন্টু পিতা মোঃ তোতা মিয়া এবং রইসুল আলম রিপন কাউন্সিলার।
মামলার এজাহরে বাদী রবিউল ইসলাম মামুন (৩৮) উল্লেখ করেন তিনি ঘটনার সময় বরগুনা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। বর্তমানে বরগুনা পৌর যুবদলে যুগ্ম আহবায়ক। এজাহরনামীয় আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির বর্তমানে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়াম্যান এবং বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামী সহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা কেবল সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন থানা এলাকায় জোর বিভিন্ন অপকর্ম করাই ছিল তাহাদের পেশা। ঘটনার দিন ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারী সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ছয়টার সময় আসামীর নির্দেশে ঘটনাস্থল বরগুনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ শহরের লেক পাড়ের পূর্ব পাশে পাকা রাস্তার উপর থেকে এজাহারনামীয় আসামীরাসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা আমাকে জোর পূর্বক ধরে ১নং আসামীর চেম্বারে নিয়ে যায়। ১নং আসামীর চেম্বারে এজাহারনামীয় আসামীরাসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা আমাকে এলোপাথারী মারধর করিয়া জখম করে এবং একপর্যায়ে ১নং আসামী আমার বাবার নিকট ১০,০০, ০০০০/= (দশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে। উক্ত টাকা না দিলে আমাকে গুম করে ফেলবে বা যেকোন মার্ডার মামলায় আসামী দিয়ে দিবে। পরবর্তীতে ১-৩নং সাক্ষীদের মাধ্যমে আমার পিতা আঃ রব খান ৬,০০,০০০/=(ছয় লক্ষ) টাকা আসামীদের নিকট পাঠালে উক্ত টাকা ১নং আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির রেখে আমাকে ছেড়ে দেয়। এরপরে সাক্ষীরা আমাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকৎসা করায়। পরবর্তীতে আমি ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি সকাল সাড়ে দশটার সময় বরগুনা অগ্রনী ব্যাংক শাখা থেকে ১০,০০০/= (দশ হাজার) টাকা উত্তোলন করিয়া ২য় ঘটনাস্থল বরগুনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ পশু হাসপাতাল রোড সংলগ্ম বরগুনা অগ্রনী ব্যাংক শাখা এর সামনে থেকে বাসায় ফেরার সময় ২নং আসামী দালাল মিজু এর নেতৃত্বে এজাহারনামীয় ৩-৬নং আসামীরাসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের সহায়তায় এলোপাথারি মারধর করতে করতে ১নং আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির এর চেম্বারে নিয়ে যায়। তখন ১নং আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির অন্যান্যা আসামীদের সহায়তায় আমার নিটক ৪,০০,০০০/= (চার লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে। উক্ত টাকা আমি আসামীদের নিতে না পারায় ১নং আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির অন্যানা আসামীদের সহায়তায় একটি সাদা স্ট্যাম্পে ৪,০০,০০০/= (চার লক্ষ) টাকা লিখে জোড় পূর্বক আমার স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে আমাকে বরগুনা থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে। এছাড়াও এজাহারনামীয় ১নং আসামী বলে যে উল্লেখিত দাবীকৃত চাঁদার টাকা পরিশোধ না করিলে আমাকে এলাকায় থাকতে দিবে না মর্মে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।
আমি বিএনপি এর সমর্থক হওয়ায় উল্লেখিত আসামীদের রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে আমার নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলাসহ মোট ১২ টি মামলায় আমাকে আসামী করে। তখন উল্লেখিত বিষয়ে আমি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করিলেও আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় কোন প্রতিকার পাই নাই। ঘটনার পর থেকে বিগত ০৮ বছর আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় প্রতিকার পাইব না বিধায় অত্র মামলার এজাহার দায়ের করিতে বিলম্ব হল।
এব্যাপারে বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, গতকাল মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। প্রধান আসামি জেল হাজতে রয়েছে। অন্যদের গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছে।
এসআই