• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

রাজাপুরের ২৫ কিলোমিটার রাস্তা এখন মরণ ফাঁদ, জনদুর্ভোগ চরমে 


ভোলা প্রতিনিধি  আগস্ট ১৭, ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম
রাজাপুরের ২৫ কিলোমিটার রাস্তা এখন মরণ ফাঁদ, জনদুর্ভোগ চরমে 

ভোলা: সামান্য একটু খানি বৃষ্টি হলেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুরের ৫টি গ্রামের ২৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা। 

এ বছর কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় এসব রাস্তা গুলো চলাচলের জন্য প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে রাজাপুরে গিয়ে দেখা যায় রাজাপুরের পাউবো নির্মিত একমাত্র বেড়িবাঁধ থেকে মধ্য কন্দ্রকপুর গ্রামের ৬৩ নং চরসীতারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে চর মোহাম্মদ আলী গ্রামের চরমোহাম্মদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, কন্দ্রকপুর গ্রামের দারোগা খাল বাজার থেকে রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে রৌদ্রের হাট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, জনতা বাজার ওবায়দুল হক বাবুল মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে রোদ্রের হাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার, মনসা গ্রামের ভাঙ্গা ব্রীজ থেকে ক্লোজার বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার, ডাইয়া গ্রামের শাজাহান বেপারী জামেমসজিদ থেকে ডাইয়া বাজার হয়ে বান্ধের পাড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, ডাইয়া বেড়িবাঁধ থেকে আনন্দ বাজার হয়ে বাহাদুর খেয়া ঘাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারসহ প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তার চলাচলের অনুপযোগী। 

এসকল প্রতিটি রাস্তা ব্যবহার করে একাধীক বাজার, মসজিদ,মন্দির, স্কুল, কলেজ এমনকি জরুরী স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা নিতে প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হয় হাজার হাজার মানুষের। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজাপুর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় হাট জনতা বাজার হওয়ায় আশেপাশের কাছে এ বাজারটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ জেলা সহর ভোলায়  যাওয়ার অন্যতম প্রধান সড়ক জনতা বাজার - রোদ্রের হাট হয়ে ইলিশা বাজার ভোলা - লক্ষীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে উঠতে হয়। ফলে চাকরিজীবী থেকে শুরু করে স্কুলগামী সবাই এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। প্রতিদিন এ সড়কে কয়েকশ’ যানবাহন চলাচল করে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।

স্থানীয়রা মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে রাস্তাটি সংস্কারক রণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

স্থানীয় সুশীল সমাজের সমাজ সেবক মো.  হারুন হাওলাদার বলেন, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ও শিক্ষার্থী জেলা সহরে যাতায়াত করে, এই রাস্তাটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা। খানা খন্দের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে, আবার জরুরী সেবা গ্রহণ করতে অসুস্থ ব্যাক্তি কিংবা মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে প্রেরণ করতেও বিঘ্ন ঘটে। তিনি বলেন, অনেক ভোগান্তি হয় তবুও এ রাস্তায় যাতায়াত করতে হয় কারণ বিকল্প কোনো রাস্তা নেই।

৬৩ নং চর সীতারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল এসেম বলেন আমার স্কুলের সামনের এই রাস্তাটি একটি জনবহুল রাস্তা এ রাস্তায় দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি এনজিও প্রধান কার্যালয়,  ভোলা - মেহেন্দীগঞ্জে পারাপারের খেয়া ঘাটসহ ভোলারচর, রামদাসপুর চর, কানিবগার চর সহ বড় বড় কয়েকটি চরে কৃষি কাজ করতে ও কৃষি পন্য পরিবহনের জন্য রাস্তাটি অনেক ভূমিকা রাখে, তবে খানা খন্দে রা্স্তাটি ভেঙে যাওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির স্বীকার হন কৃষক, জেলে, মৎস আড়ৎদার, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ হাজার হাজার মানুষ। রাস্তাটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ তাই জরুরী মেরারমত করা আবশ্যক বলে জানান তিনি।

রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকরী শিক্ষক হুমায়ুন কবির জমাদার বলেন, আমাদের স্কুলের সামনের দারোগা খাল বাজার ইউনয়ন পরিষদের সম্মুখ হয়ে রোদ্রেরহাট পর্যন্ত সড়কটিতে মরণ ফাঁদের সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন যা ছিলো বর্ষায় সড়কটির অবস্থা বেহাল চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

এতে আমরা ও শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এসড়কের পাসে একটি ইউনিয়ন পরিষদ সহ তিন চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে জরুরী এই সড়কটি মেরামত করা হলে জনসাধারণের ভোগান্তি কমে স্বস্তি ফিরে আসবে। 

রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হক মিঠু চৌধুরী বলেন, আমার পরিষদের সামনের এই সড়কটি সহ বেশ কিছু সড়কে খানা খন্দে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। পরিষদের ত্রাণের মালা মাল বহনকারী গাড়ী ঝুঁকি নিয়ে আসতে হয়। এসব রাস্তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। 

ভোলা সদর উপজেলা প্রকৌশলী শিমুল কর্মকার জানান, রাজাপুর সহ সদর উপজেলার অনেক ইউনিয়নে রাস্তাঘাট মেরামতের প্রয়োজন, এসকল রাস্তায় পুন:মেরামতের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

ভোলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভোলায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে অনেক রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে। রিমালের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের প্রকল্প অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়েছে, আশাকরি অতিদ্রুত এসব ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করতে পারবো। তবে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। 

এআর

Wordbridge School
Link copied!