• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভাঙন আতঙ্কে তিস্তা পাড়ের মানুষ


লালমনিরহাট প্রতিনিধি আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০২:৫৫ পিএম
ভাঙন আতঙ্কে তিস্তা পাড়ের মানুষ

ছবি : প্রতিনিধি

লালমনিরহাট: তিস্তায় পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদীর স্রোত বিদ্যমান থাকায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। এতে ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাছে তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষজন। ভাঙনের তীব্রতা সব চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে।

গত ১২ ঘন্টায় গোকুন্ডা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। এসব এলাকার বসবাসরত মানুষজন নিজেদের শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে আপ্রান চেষ্টা করছেন। তবে এ জন্য কোন সময় পাচ্ছেন না তারা। মুহুর্তের মধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে ঘরবাড়ি সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। 

ভারতের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে তিস্তাপাড়ের হাজারও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উজানের ঢল যে কোনো সময় লালমনিরহাটে প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে- এমন শঙ্কায় নির্ঘুম রাত পাড় করছেন তারা। গজলডোবা বাঁধে পানির চাপ বাড়ায় তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৫০ মিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার), যা বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

এদিকে, তিস্তায় পানি বাড়তে থাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। গত দুই দিনে তিস্তা নদীর ডান তীর লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়া গাছ ইউনিয়নের হরিনচড়া, গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা গ্রামে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে তিনশ বিঘা ফসলি জমি ও দশ থেকে পনেরটি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শতাধিক পরিবার। একদিকে তিস্তা পাড়ে ভাঙন অন্য দিকে বন্যা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেললেও, যা ভাঙ্গন রোধে অপ্রতুল।

চর গোকুন্ডা এলাকার ছকমল উদ্দিন বলেন, শুনতেছি ভারতের নাকি বাঁধ ভেঙে তিস্তা নদীতে বন্যা শুরু হবে। কয়েক দিন থেকে একটু একটু পানি বাড়ার দিকে আছে। এবার পানির অনেক স্রোত, এতে চর গোকুন্ডার অনেক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে আমরা বন্যা আর ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছি।

হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী এলাকার ফারুক হেসেন জানান, তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। প্রতি বছর ভাঙ্গন কবলে পরে হাজার হাজর পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। আমাদের  ত্রাণ দরকার নেই তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হলে তিস্তা পাড়ের লোকজন স্থায়ীভাবে নিরাপদে বসবাস করতে পারবে।

গোকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ সরকার টোটন জানান, তিস্তা নদীতে তেমন বন্যা না হলেও অতিরিক্ত স্রোতের কারনে ৮ নং ওয়ার্ডে চর গোকুন্ডা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় তীব্র ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার থেকে প্রায় দশ থেকে পনেরটি বাড়ি ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। চোখের সামনে গ্রামের একের পর এক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হতে থাকলেও কিছুই করা যচ্ছে না।

লালমনিরহাটের পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তায় বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে পানির স্রোত বেশি থাকায় কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

এসআই

Wordbridge School
Link copied!