• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুরে বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন, বাড়ছে রোগবালাই


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
লক্ষ্মীপুরে বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন, বাড়ছে রোগবালাই

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বন্যার পানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের জনজীবন। সেই সাথে বেড়েছে খাদ্য সংকট। গেল কয়েকদিনের তুলনায় জেলায় পানি কমতে শুরু করলেও, বন্যার দূষিত পানির কারনে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগবালাই। দূষিত পানিতে বন্যাকবলিত বাসিন্দারা ডায়রিয়া সহ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যার পানিতে প্রতিদিন মাড়িয়ে চলাচল করায় তাদের পায়ের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ক্ষত।

রোরবার (১ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের উত্তর দূর্গাপুর ও যাদৈয়া এলাকায় গিয়ে দেখা মেলে এমন চিত্র।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বন্যা আক্রান্ত হওয়ার পর ত্রাণ হিসেবে তারা শুকনো খাবার পেলেও কেউ ডায়রিয়া ও চর্মরোগের কোন ওষুধ পাননি। এতে করে বন্যার দূষিত পানির কারণে নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।

দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা লাইলী বেগম বলেন, বন্যায় আমার ঘরের ভেতরে পানি উঠেছে। কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ঘরের কাদা-পানি পায়ে লাগতে লাগতে পায়ের নীচে ও আঙুলের ফাঁকে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা খোকন ভূইয়া বলেন, দীর্ঘদিন বন্যার পানি জমে থাকায় তা দূষিত হয়ে পড়েছে। কোথাও পানি এক মাস ধরে আটকা, কোথাও ২০ থেকে ২৫ দিন। এসব পানি এখন দূষিত হয়ে পড়েছে। পানি লাগলেই চুলকানি শুরু হয়।

তিনি আরো বলেন, এলাকায় প্রায় বেশির ভাগ লোকজন চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। কারো চুলকানি, কারো পায়ের তলা বা আঙুলের ফাঁকে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ মুহূর্তে ত্রাণের পাশাপাশি চর্মরোগের ওষুধ প্রয়োজন। পানিবন্দি অনেকেই দূষিত পানি মাড়িয়ে দূরদূরান্তে গিয়ে ওষুধ আনতে পারেন না। অনেকের আর্থিক সচ্ছলতাও নেই।

নির্মাণশ্রমিক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বাড়িতে কোমর পানি। সড়কে হাঁটুর উপরে। প্রতিদিন চার থেকে ছয়বার পানি মাড়িয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। এখন পুরো শরীর চুলকায়। পায়ের তলায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।

মো. সিরাজ বলেন, পায়ের তলায় মাংস খসে গিয়ে ছোট ছোট গর্ত হয়ে গেছে। তারপরও প্রতিদিন দূষিত পানি মাড়িয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। বাড়িতে আমার স্ত্রীর ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, পানি কমতে শুরু করেছে। অনেকদিন পানি জমে থাকায় চারিদিকে পানিবাহিত রোগ বেড়ে গেছে। বেশিরভাগ লোকজনের ডায়রিয়া, চুলকানি, খোসপাঁচড়াসহ নানা রোগ দেখা দিয়েছে। এ জাতীয় রোগীরা দোকানে এসে ওষুধ নিচ্ছেন। বন্যার পানি দূষিত হয়ে পড়ায় এমন রোগ শুরু হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আহম্মদ কবির বলেন, জেলায় আমাদের ৬৪টি মেডিকেল টিম আছে। এ ছাড়া জেলা সদর হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মেডিকেল টিমের মাধ্যমে ও স্বেচ্ছাসেবীরা টিম করে বন্যাকবলিত এলাকায় ক্যাম্পেইন করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!