• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের মানুষ


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের মানুষ

কুড়িগ্রাম : স্বামীর ভিটাও গেল, শ্বশুরের ভিটাটাও গেল। এখন আমরা কই যামু। আপনেরা আমাদের থাকনের ব্যবস্থা করেন। এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ গ্রামের গৃহবধূ নাজমা বেগম।

তার স্বামী ছমির উদ্দিন বলেন, এই নিয়া তিনবার বাড়ি ভাঙল। এখন থাকনের কোন জায়গা নাই। আমাগো বাঁচান।

গত ১৫ দিন ধরে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ গ্রামের সরিষাবাড়ি শ্যালোঘাট থেকে পূর্বে চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন চলছে। ভাঙন প্রতিরোধে বিদ্যালয়ের দুই পাশে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।

ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার শহিদুল আলম জানান, গত ১৫ দিনে তার এলাকার ৯টি বাড়ি ভেঙেছে। ভাঙনের মুখে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫০ থেকে ৬০টি বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে।

এছাড়া গত সাতদিনে ভেঙেছে ফকির উদ্দিন, সোনামিয়া, মোন্নাফ, চাঁদমিয়া, মতিয়ার, আতিয়ার, আনম, আজিজুল ও বাবলুর বাড়ি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করছে না বলে অভিযোগ করেন শহিদুল।

ভাঙন কবলিত এলাকাটি ঘুরে দেখা গেছে, নদী এই শান্ত তো, এই আবার ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করছে। গ্রামের ফসলি জমিন চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে। কৃষকের চোখে মুখে বসতবাড়ি আর জমি হারানোর বেদনা। কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।

খিতাবখাঁ গ্রামের কৃষক হামিদ আলী বলছিলেন, আমার এক একর আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন আমার খাওয়ার জমি নাই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে এখন পথে বসার মত অবস্থা।

জাহেদা বেগম বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে শেষ মাথায় চলে আসছি। এখন মানুষের হাত-পা ধরেও থাকনের জায়গা পাইছি না। কই যামু কন!

ভাঙন কবলিতদের জন্য কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ প্রামাণিকের বাড়িতে গেলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ৬-৭টা বাড়ি ভাঙার খবর করার জন্য সাংবাদিক লাগে? আমি কোনো বক্তব্য দিবো না। এমন ভাঙন কতো হয়।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, বাজেট সংকটের কারণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দিতে পারছি না। তবে স্কুলটি রক্ষায় আমরা ইতোমধ্যে তিনশ জিও ব্যাগ ফেলেছি।

আরও জিও ব্যাগের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এখন সীমিত আকারে পাচ্ছি। ফলে আমাদের ইচ্ছে থাকলেও সব ভাঙন কবলিত এলাকায় যেতে পারছি না।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!