পাবনা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে কাতারাচ্ছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার জাহাঙ্গীর ও ইমরান হোসেন নামের দুইজন।
এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে পা অচল হতে চলেছে ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর শিয়ালবাড়ীয়া গ্রামের হাফেজ মন্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীরের (২০)।
অপরদিকে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছেন একই ইউনিয়নের দুধবাড়ীয়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে ইমরান হোসেন (১৭)। জাহাঙ্গীর একটি বেসরকারি কোম্পানীতে কর্মরত। আর ইমরান হোসেন স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
গত ৪ আগস্ট গাজীপুরের বিরানী বাজারে ছাত্র জনতার আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হন জাহাঙ্গীর। অপরদিকে গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় পিতার সঙ্গে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন ইমরান হোসেন। সে সময় পুলিশ মিছিলে ছররা গুলি চালালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার শরীর থেকে বেশ কয়েকটি গুলি বের করা হয়। পরে সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে রেফার করেন। ইমরানের ডান চোখ ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে সর্বমোট ২৯টি গুলি লাগে। অস্ত্রোপচারের পর এখনও তার শরীরে রয়ে গেছে আরও ১৩টি গুলি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুস্থ হতে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন ইমরানের। অস্ত্রোপচার করে তার চোখের দু’টি গুলি বের করতে হবে। কিন্তু গরিব বাবার পক্ষে তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। অর্থাভাবে সেখানে চিকিৎসা করাতে না পেরে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি।
ইমরান হোসেন জানান, তার বাবা ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। আন্দোলনের সময় বাবাকে দেখতে যান তিনি। ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ডাক আসলে বাবার সঙ্গে ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দেন। পরে পুলিশ ছররা গুলি চালালে তার শরীরে বিদ্ধ হয়।
ইমরানের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, একদিন কাজ না করলে ভাত জোটে না। এ অবস্থায় ছেলের চিকিৎসা করাবেন কিভাবে? তাই সবার নিকট সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, মাদ্রাসা ছাত্র ইমরান হোসেন ও জাহাঙ্গীরের সুচিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
এসএস