লক্ষ্মীপুর: ভয়াবহ বন্যায় লক্ষ্মীপুরে ১৮ হাজার ৩৬৫টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলোর মধ্যে কাঁচা ঘরের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া পাকা ও আধাপাকা ঘরগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ঘরগুলো মেরামত করতে আনুমানিক ১৩০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন সূত্র।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া সোনালীনিউজকে বলেন, বন্যায় বহু বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে কাঁচা ঘরগুলো একটু বেশিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলোর তালিকা করেছি। সে তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর জেলায় ১৮ হাজার ৩৬৫ টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় সাড়ে ৭ হাজার, রায়পুরে ১ হাজার ৩০৮, রামগঞ্জে ১ হাজার ৮৮৫, রামগতিতে ১ হাজার ২৯২ ও কমলনগরে ৬ হাজার ৩৮০ বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরগুলো মেরামতের জন্য আনুমানিক ১৩০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছে কার্যালয়।
জানা যায়, জেলার ৫ উপজেলার প্রায় ৫০ ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে। এখনো সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ১২টি ইউনিয়নে বিস্তির্ণ এলাকা পানিতে ভাসছে। খালবিলগুলো অবৈধভাবে দখল করে রাখার কারণেই সহজেই পানি নামছে না। এতে ১৫-২০ দিন ধরে বন্যার কবলে রয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকা। দীর্ঘ মেয়াদী এ বন্যা মানুষের জন্য বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছে। পানিতে নিমজ্জিত থাকা কাঁচা-পাকা ও আধাপাকা বসতঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাটির ঘরগুলোর ভিটা কাদায় পরিণত হয়েছে। কাঠ ও টিনের তৈরি বেড়াগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠে খুঁটিগুলো পঁচে গেছে। জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে অসংখ্য বসতঘর।
এদিকে বন্যার্ত এলাকার অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী ও দিনমজুর। এ বন্যায় উপার্জন বন্ধ হয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা। ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরগুলো মেরামত নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ঘর মেরামতে সরকারিভাবে এখনো কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি। সরকারের উপদেষ্টা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা লক্ষ্মীপুরে এসে পুনর্বাসনের ব্যবস্থার আশ্বাসসহ নতুন ঘর নির্মাণের কথা জানিয়েছেন। তবে সরকারি সহায়তা না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামত অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এসএস