• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

পূর্বধলার বিল-ঝিলে অবাধে চলছে বক শিকার


পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৬:১২ পিএম
পূর্বধলার বিল-ঝিলে অবাধে চলছে বক শিকার

নেত্রকোনা: শীতের মৌসুম আসার পূর্বেই ধানের মাঠে কিংবা বিলপাড়ে দেখা যাচ্ছে বক শিকারের ভয়াবহ উৎসব। এছাড়াও শিকারকৃত বকগুলো হর-হামেশায় বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারগুলোতে। 

এমনই চিত্র দেখা গেছে নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলাধীন ঘাগড়া গ্রামে। সরেজমিনে দেখা যায়, ধান ক্ষেতের পাশেই বাঁশের চাটাই, কলাপাতা ও বেতগাছের পাতা দিয়ে তৈরী করা হয়েছে ছোট্ট দুটি ঝুপড়ি-ঘর। দুটি ঘরে দুইজন শিকারী লুকিয়ে বসে থাকেন। তাদের সাথে থাকে তাদেরই পোষা কয়েকটি বক। লাঠি দিয়ে সেই বকগুলোর পায়ে সুতো বাঁধা। শিকারীদের ইশারায় উড়তে থাকে পালিত বকগুলো। যখন আশে-পাশে কোনো বহিরাগত বক আসে তাদের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে পালিত বকগুলো উড়তে থাকে। এভাবেই এক সময় বকগুলো এসে ঝুপড়ি ঘরের চূড়ায় বসে। ঠিক তখনি ঘরে লুকিয়ে থাকা শিকারি বকের পা ধরে ফেলে। এভাবেই চলে বক ধরার প্রতিযোগিতা।

উপজেলার কোমা বিল সহ উপজেলার হোগলা, ঘাগড়া, জারিয়া, ধলামুলগাঁওসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে এভাবে অবাধে বক শিকার করা হচ্ছে। আগে শীতকালে শিকার করলেও এবার এখন থেকেই নেমেছে বক শিকারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিকারি বলেন, ‘আগে বেশী বক পাইতাম । অহন আগের মতো পাই না। মানুষে বকের মাংস খাইতো চায়, তাই মাঝে-মইদ্যে ধরতে আহি।’ এটা অন্যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এইডা আমরার পেশা না, মনের সখে শিকার করি।’

ঘাগড়া গ্রামের ধানচাষী মুনায়েম জানান, এরা ভোরবেলা এসে ফাঁদ পাতে। অবাধে বক শিকার করার কারণে এখন আগের মতো বক দেখা যায় না। তারা এসব করে পরিবেশের পাশাপাশি আমাদের রোপণকৃত ধান ক্ষেতেরও ক্ষতি করছে।
 
কোমা বিলের পাশের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার জানান, এখানকার শিকারীরা প্রতিদিন খুব সকালে ও বিকেলে বক শিকার করে থাকে। ধৃত বক স্থানীয় বাজারে তারা ৮০ থেকে ৯০টাকা করে প্রকাশ্যে বিক্রি করে থাকেন।
 
পূর্বধলা পরিবেশ আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সুজন জানান, ইতোপুর্বে পূর্বধলা উপজেলাকে পাখি নিধন মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষনা করেছিল উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু এর পরেও এখানে অবাধে পাখি নিধন করা হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক অবহিত করে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এসব বন্ধ করার দাবী জানান তিনি।

পূর্বধলা সরকারী সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মোঃ শাহজাহান কবীর খান বলেন, বক ও অন্যান্য প্রজাতির পাখি ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই অবাধে পাখি নিধন বন্ধ করতে হবে।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খবিরুল আহসান বলেন, পাখি ধরা দন্ডনীয় অপরাধ। তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!