চাঁদপুর: চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত ও উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টোরাগড় ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাজীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের টোরাগড় সর্দারের বাড়ির বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে তা হাজীগঞ্জ বাজারে ছড়িয়ে পড়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক হাজীগঞ্জ বাজারে দলীয় এক সভায় হাজীগঞ্জ বাজার, বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড দখলে নেওয়ার বিষয়ে দলীয় লোকজনকে নির্দেশ প্রদান করেন। তার 'দীর্ঘ ১৫ বছর এসব স্থান আওয়ামী লীগের দখলে ছিল, এখন এগুলো আমাদের দখলে নিতে হবে' এমন নির্দেশনা পেয়ে সেখানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইমাম হোসেন ও পৌর যুবদল আহ্বায়ক সেলিম মিজির গ্রুপের আধিপত্য সৃষ্টি হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে হাজীগঞ্জ বাজারে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পথচারীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যার পর পুনরায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ শুরু হলে তা রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে। হাজীগঞ্জ বাজারে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো বাজারের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এর ফলে চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কে যান চলাচল কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। আতংকিত হয়ে পড়েন বাজারের ব্যবসায়ী ও বাজারে আটকেপড়া মানুষ। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়। এর আগে প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপী বাজারে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ভাংচুরের ঘটনা ঘটলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, 'আমরা খবর পেয়ে রাতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বাজারে অবস্থান নিয়ে পরিবেশ শান্ত করেছি। তবে হাজীগঞ্জ সরদার বাড়ি ও টোরাগড় এলাকার বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। অনেকেই আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জের ইউএনও তাপস শীল বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের মারামারি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১৭ জন উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বর্তমানে হাজীগঞ্জে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এসআই