চট্টগ্রাম : পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ চলছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ‘সিএইচটি ব্লকেড’ নামে এই অবরোধ শুরু হয়।
এছাড়া রাঙামাটিতে বাস, ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। এদিন সকাল থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়।
এর আগে শুক্রবার ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র জনতার’ ব্যানারে ৭২ ঘণ্টার এই অবরোধের ডাক দেয়া হয়। অবরোধে তিন জেলায় দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে ঢাকায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার আয়োজিত সমাবেশ থেকে ঘোষিত তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে ইউপিডিএফ। অবরোধের সমর্থনে সকালে খাগড়াছড়ি সাজেক সড়ক,পানছড়ি, রামগড় সড়কে টায়ার জ্বালিয়েছেন অবরোকারীরা।
রাঙামাটি শহরের সহিংসতার ঘটনায় এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়। গতকাল শুক্রবার পুড়িয়ে দেয়া হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যালয়সহ, বনরুপা, দক্ষিণ কালিন্দপুর, বিজন সারনি, উত্তর কালিন্দপুর, হাসপাতাল এলাকাসহ একাধিক এলাকার একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সাংবাদিকদের বাইকসহ শতাধিক যানবাহনে আগুন দেয়াসহ ভাঙচুরও চালানো হয়েছে। রাঙামাটি জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে অফিসের যানবাহন।
পুলিশ সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা পাহাড়িদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙামাটিতে সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন মিছিল বের করে। মিছিলটি বনরুপা বাজারে পৌঁছালে পুরো শহরে গুজব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বনরুপা বাজারে হামলা ও আগুন দেয়া হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ার নিউজিল্যান্ড রাস্তায় মামুন নামে একজনের মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশের তথ্যমতে, মামুন বাইক চুরি করে দ্রুতগতিতে পালাতে গিয়ে বিদ্যুতের পোলের সাথে ধাক্কা খেয়ে আহত হন। তখন তাকে ধাওয়া করা লোকজন পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে মামুনের মৃত্যু হয়। মামুনের বিরুদ্ধে ১৪টি চুরি মামলা এবং দুটি মাদক মামলা ছিল।
মামুনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার বিকেল খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভের পর বাস স্টেশন এলাকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাঙামাটিতে বিক্ষোভের ডাক দেন পাহাড়ি সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। খাগড়াছড়ির সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাঙামাটিতেও।
উল্লেখ্য, পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৭২ জন। এছাড়া সংঘর্ষের সময় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :