কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার মিরপুরে অবৈধভাবে বালুরঘাট দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রানাখড়িয়া গ্রামের গোরস্তান বালুরঘাটে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের বিএনপির দুই সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরীর লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
চিকিৎসাধীনরা হলেন- মিরপুর উপজেলার রানাখড়িয়া গোরস্তানপাড়া এলাকার মৃত মনিরুদ্দিনের ছেলে রাশিদুজ্জামান রাশেদ (৪৩), তার বড় ভাই আব্দুস সালাম (৪৭) ও বালু ব্যবসায়ী পাপ্পু ইসলাম। তারা সবাই বালু ব্যবসায়ী ও মিরপুর-ভেড়ামারা আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরীর সমর্থক।
জানা যায়, কুষ্টিয়ায় পদ্মা-গড়াই নদীতে বছরের পর বছর ধরে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। ইজারা বন্ধ থাকলেও বালু উত্তোলন করা হয়। যখন যারা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হয়, তখন তারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। নতুন করে বালুরঘাট ও নদী দখল করে বালু উত্তোলনের চেষ্টা করছে বিএনপির লোকজন। ফলে বালুরঘাট দখল নিয়ে রানাখড়িয়া ঘাটে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু সরকার পতনের পর তারা অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন এবং কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আহতের ভাই ও বালু ব্যবসায়ী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রায় দুই যুগ ধরে রানাখড়িয়া ঘাটে বালুর ব্যবসা করি। ৫ আগস্টের পর বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। গত পরশুদিন নদী থেকে ঘাটে বালু আনি। এতে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সমর্থক সাইফুল ইসলাম, জসিম, জুয়েল, আশরাফুল ইসলাম, আসলাম উদ্দিন, শাওন বিশ্বাস, আকাইলেসহ প্রায় শতাধিক লোকজন পিস্তলসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা চর ও বালুর ঘাট দখলের উদ্দেশ্যে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের পক্ষের পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আমরা ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরীর সমর্থক।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘাট দখল করতে যাইনি। তারা জয় বাংলার স্লোগান দিচ্ছিল। এজন্য তাদেরকে মারপিট করা হয়েছে। তারাও আমাদের মারপিট করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, বালুরঘাট দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :