ফরিদপুর: বাড়িতে বসেই তৈরি করেন নামি দামি ব্রান্ডের নকল বিদেশি মদ, এমন একটি চক্রের মূলহোতা সহ ৩ জনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। ফরিদপুরে একটি বাড়িতে রেক্টিফাইড স্পিরিট, পানি, রং এবং এসেন্স মিশিয়ে তৈরি করা হতো ভেজাল মদ।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে শুক্রবার বিকালে ফরিদপুর সদরের মুন্সিবাজার বাইপাস সড়ক ও সদরদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই তিন ব্যক্তি হলেন- ফরিদপুর সদরের রঘুনন্দনপুর পট্টাদারকান্দি এলাকার মৃত মজিদ জোমাদ্দারের ছেলে আবুল হোসেন আবুল (৫০), জেলা সদরের বিল মাহমুদপুর পূর্ব মল্লিক ডাঙ্গী এলাকার মৃত হোসেন মল্লিকের ছেলে হাফিজুল ইসলাম পাঁচু (৪৬) ও সদর উপজেলার সদরদী এলাকার ইমান আলী সেকের ছেলে আতিয়ার সেক (৩৬)। এদের মধ্যে আবুল হোসেন এ চক্রের মূলহোতা এবং হাফিজুল ইসলাম পাঁচু ও আতিয়ার সেক সহযোগী হিসেবে কাজ করেন বলে দাবি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর সদরের মুন্সীবাজার বাইপাস এলাকা থেকে ভেজাল মদ তৈরী এবং বিক্রির চক্রের মূলহোতা আবুল হোসেন ও তার সহযোগী হাফিজুল ইসলাম পাচুকে ১০ বোতল নকল মদ উদ্ধারপূর্বক গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে আবুলের দেয়া তথ্য মতে একইদিন রাতে অভিযান চালানো হয় জেলা সদরের সদরদী গ্রামের আতিয়ারের বাড়িতে। সেখান থেকে ৩ লিটার নকল মদ, মদ তৈরীর জন্য ৩১ রেক্টিফাইড স্পিরিট, একশটি বিভিন্ন ব্যান্ডের বোতলের সিপি, কাপসহ আনুসাঙ্গিক উপকরণ উদ্ধারপূর্বক আতিয়ার সেককে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আবুল এবং আতিয়ারের বরাদ দিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানায়, আটককৃতরা আতিয়ারের বাড়িতে রেক্টিফাইড স্পিরিট, পানি, রং এবং এসেন্স মিশিয়ে এই ভেজাল মদ তৈরী করেন। মদ তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় স্পিরিট, পুরোনো মদের বোতল, সিপি রং, এসেন্স সবই ঢাকা থেকে কুরিয়ারে আসে ফরিদপুরে। তারপর সেই উপকরণ আবুলের সহযোগিতায় পৌঁছে যায় সদরদী মোল্লাপাড়া এলাকায় আতিয়ার সেকের বাড়িতে। সেখানে উৎপাদিত হয় বিভিন্ন ব্যান্ডের নকল বিদেশি মদ। এরপর আবুল, আতিয়ার, পাচুর মাধ্যমে ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যায় এই নকল মদ। আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজাকে টার্গেট করে এই চক্রটি নকল মদ তৈরী করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে আসছিল।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের কোতেয়ালী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
এসএস