নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা। গত ২০ দিনে উপজেলার বিষ্ণুপুর এলাকার অন্তত ১৫ টি পরিবারের বসতভিটা ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে৷ অনেকেই ঘরে থাকা মাল জিনিসও বের করতে পারেনি। নদীর হিংস্র থাবায় মূহুর্তেই সব তলিয়ে গেছে। কোনমতে জীবন নিয়ে বাড়ি থেকে বেড় হয়ে বেঁচেছেন কেউ কেউ। অনেকেরই আর মাথা গোঁজার মত ঠাঁই নেই। শেষ সহায়সম্বলটুকু কেড়ে নিয়েছে নবগঙ্গা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষেরা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর দিন কাটছে মানবেতর ভাবে।
নবগঙ্গার ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া হাসিনা বেগম নামের এক নারী বলেন, আমার জায়গা-জমি ঘরবাড়ি সব একবারে চলে গেল। তারপর থেকে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমাগো আর জায়গা-জমি কিছুই নেই। এই বাড়িটুকুই ছিল।
রিলু ফকির বলেন, ঘরে থাকা চাউল, ডাউল ও লেপ-কাঁথা কিছুই নিতে পারিনি। একবারে সবকিছু ডুবে চলে গেছে। আমার জায়গা-জমি যা ছিল, সব চলে গেছে। নতুন করে ঘর উঠানোর মত জায়গা নেই। আমার আর কিছু নাই। এখন রাস্তায় রাস্তায় আছি। মানুষ যা দিচ্ছে, তাই খাচ্ছি।
ক্ষতিগ্রস্ত সেলিনা আহমেদ বলেন, জিনিস বের করতে করতে ঘর নদীতে চলে গেছে। নিজেরা দৌড়ে পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছি। এখন তাদের মাথা গোজার ঠাঁই নেই।
ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই এলাকায় ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত শতাধিক পরিবার। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিলীন হবে তাদের ঘরবাড়ি, কবরস্থান, মসজিদ রাস্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাঁধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
মাহবুব হোসেন বলেন, গতবার একবার নদী ভাঙছে, এবারও ভাঙছে। সরকার যদি স্থায়ীভাবে বাঁধের ব্যবস্থা না করে, এলাকার অন্তত একশ বাড়িঘর, মসজিদ-মন্দির সব ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। আগেও নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। এখনও ঝুঁকিতে রয়েছি। রাতে ঘুমাতে পারছি না, কখন জানি নদী ভাঙনের সাথে আমরা চলে যায়।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর পানি উন্নয়ন সার্কেল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. সাবিবুর রহমান বলেন, বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে। দ্রুত ভাঙন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে। একইসাথে নদীরপাড় দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে স্থায়ীভাবে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প নেওয়া হবে।
এসএস