বরগুনা: বরগুনা শহরে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা বাণিজ্য আর সড়কের ওপর যত্রতত্র পার্কিং করে গাড়ি রাখার কারনে সাধারণ মানুষের চলাচলে প্রতিনিয়ত মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে নারী, বৃদ্ধ ও স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। শহরে অতিমাত্রায় অটোরিকশা চলাচলে তৈরি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। এসকল যানবাহনের উচ্চ মাত্রায় হর্ণ বাজানোর ফলে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠছে জনজীবন। ফলে এই অচল অবস্থা নিরসনের দাবি জানিয়েছে শহরবাসীরা।
বরগুনা শহরের মাছ বাজার ব্রীজ থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত আধা কিলোমিটারেরও কম জায়গা জুড়ে সারাদিন লেগে থাকে যানজট। মাছ বাজারের পূর্ব পাশে, পশ্চিম পাশে, পৌর মার্কেটের সামনে ও পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় রয়েছে অবৈধ চারটি গাড়ি স্ট্যান্ড। এছাড়াও রয়েছে দুটি মোটর সাইকেল স্ট্যান্ড। এসকল স্ট্যান্ড ও সড়কের ওপর প্রতিনিয়ত যাত্রী ওঠা নামানো ছাড়াও সড়কের দুই পাশ ধরে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকে অটোরিকশা ও রিকশা। ফলে সরু জায়গার মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে হয় সকল চলাচলকারী যানবাহনের। আর এতেই সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজটের। ট্রাফিক বিভাগ ও পৌরসভা থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কর্মীরা চেষ্টা করেও আনতে পারছেনা সড়কের শৃঙ্খলা।
সড়ক ও ফুটপাত দখল থাকার ফলে পথচারীদের চলাচল করতে হিমশিম খেতে হয়। মাঝে মধ্যে ঘটে যায় দূর্ঘটনা। বরগুনা শহরে বিভিন্ন সড়কের মধ্যে মাছ বাজার থেকে শুরু করে সড়কের দুই পাশের ফুটপাতগুলোতে ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল রাখায় এবং তা কেনা বেচায় কম বেশি ভিড়ভাট্টা লেগেই থাকে। মূল সড়কের মাছ বাজার, তরকারিপট্টি, ফলপট্টি, পানপট্টি, বাকালীপট্টি, সাহাপট্টি, আলাইপট্টি, লোহাপট্টি, দুধপট্টি এসকল জায়গায় দোকানীদের পসরা এবং অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকার দরুন সব সময় লেগে থাকে যানজট। এসকল পথ দিয়ে সকাল বেলা ও ছুটির পর স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীদের চলাচলে হতে হয় বিড়ম্বনার শিকার।
বরগুনা শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে অটোরিকশা ও ব্যাটারী চালিত গাড়ি। বরগুনা পৌরসভার হিসাব মতে পাঁচ হাজারের মতন রিকশা ও অটোরিকশা লাইসেন্স থাকলেও বাস্তবে রয়েছে তিনগুণ। বরগুনার গণমাধ্যম কর্মী সানাউল্লাহ বলেন, অভিজ্ঞতা ছাড়া স্বল্প পরিশ্রমে অধিক আয়ের একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় দিন দিন অটোরিকশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে অনিয়ন্ত্রিত চালানোর ফলে ঘটছে দূর্ঘটনা। এটি নিরসন করতে লাইসেন্স প্রাপ্ত চালক নিয়োগ ও নির্দিষ্ট পার্কিং গাড়ি রাখার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ও ট্রাফিক বিভাগের নজরদারি বাড়ানো উচিৎ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আঃ হালিম বলেন, যানজট নিরসনে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সকলের সাথে মিটিং করে জানানো হবে কে কোথায় কতটুকু চলাচল করতে পারবে। পরবর্তীতে এর ব্যাপ্তি হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরগুনা পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মোঃ তানজিম বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শহরের যানযট নিরসনে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যত্রতত্র গাড়ি ঘুরানো বন্ধ করতে ইতোমধ্যে সড়কে রশি টানানো হয়েছে। এছাড়াও লাইসেন্সবিহীন কেউ যেন গাড়ি চালাতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং পৌরসভার লাইসেন্স প্রাপ্ত গাড়ী আমরা আলাদাভাবে চিহ্নিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রণে আসার পরপরই আমরা শহরে নাগরিক চলাচল উপযোগীতে ফুটপাত মুক্ত করা হবে।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :