লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কাজ করার সময় মো. জসিম নামে (৪৫) এক বিদ্যুৎকর্মী অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের ঝুমুর এলাকায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর দগ্ধ জসিমকে খুঁটি থেকে নামিয়ে তার সহকর্মী এবং স্থানীয় লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
জসিম লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিনের ছেলে। তবে এ দুর্ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছে স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয়রা জানায়, সকাল থেকে লক্ষ্মীপুর পিডিবি অফিসের সামনে থাকা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কাজ করছিলেন কর্মীরা। দুপুরের দিকে ওই খুঁটিতে কাজ করা অবস্থায় জসিম নামে একজন কর্মীর দেহে আগুন লেগে যায়। এতে তার শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। খুঁটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ না করে কাজ করার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। বিদ্যুৎ অফিসের সামনেই এমন দুর্ঘটনাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন তারা।
কয়েকজন বিদ্যুৎকর্মী জানান, জসিম যে খুঁটিতে কাজ করতেছিলেন, ওই খুঁটি ওপরের অংশে থাকা বৈদ্যুতিক লাইন চালু ছিল। কিন্তু সে ওই খুঁটির অন্য আরেকটি বন্ধ লাইনে কাজ করার সময় ওপরের চালু লাইন থেকে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মো. সবুজ বলেন, যে খুঁটিতে কাজ করা হচ্ছিল, সেটাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু পাশের খুঁটিতে লাইন চালু ছিল। কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক ক্যাবল পাশের চালু লাইনের সংস্পর্শ করলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমান হোসেন বলেন, অগ্নিদগ্ধ জসিমের দুই হাত, বুক ও পেট পুড়ে গেছে। তার শরীরের ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল আমিন বলেন, খুঁটিতে কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদারের একজন কর্মী আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্মীরা কাজ করার সময় ঠিকাদারের চাহিদা অনুযায়ী লাইন বন্ধ রাখা হয়। সকালে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বৈদ্যুতিক লাইন বন্ধ রাখা হয়েছে। তখন ঠিকাদার তাজুল ইসলামের কর্মীরা লাইন মেরামতের কাজ করে। কিন্তু যখন দুর্ঘটনা ঘটেছে তখন লাইন চালু ছিল। ওই সময় বিদ্যুৎকর্মী কাজ করার কথা ছিল না। ওই কর্মী চালু লাইনে কেন উঠেছে, সেটা বোধগম্য নয়।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :