কক্সবাজার: থানায় যোগদানের মাত্র দুই মাস না পেরোতেই প্রত্যাহার করা হয়েছে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম নোমানকে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) তাকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করার আদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আহসান হাবিব পলাশ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কক্সবাজার সদর মডেল থানা ওসি ফয়জুল আজিমকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হলো।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ওসি ফয়জুলকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করার আদেশ পেয়েছি। দ্রুত তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
জানা যায়, ওসি ফয়জুল আজিম গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে ঘুষ গ্রহণ ও মামলা বাণিজ্য, থানার ভেতর বিশ্রমাগার তৈরী, গণ-অভ্যুথানের মামলায় এজাহারভুক্ত কোন আসামি আটক করতে না পারা ও ৫ আগস্টের আগে কক্সবাজারের আওয়ামী নেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এই নিয়ে নানা সমালোচনা মুখের পড়েন তিনি।
এছাড়া গত ৭ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া পয়েন্টে জলদস্যুদের হাতে ডাকাতির শিকার হয় ‘আল্লাহর দয়া-৩’ নামে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর একটি ফিশিং বোট। এসময় ডাকাতদের গুলিতে মাঝি কুতুবদিয়ার বাসিন্দা মোকারম নিহত হয়। বোটসহ অন্য ১৯ জেলেকে অপহরণ করে দস্যুরা। তবে পরে বোটের মেশিন বিকল করে তাদের ছেড়ে দেয়। পাঁচদিন পর গত শনিবার অপর একটি ফিশিংবোট সাগরে ভাসমান অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে এবং রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে বিকল ফিশিংবোটটিসহ ১৯ জেলে কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং আকবরবলী ঘাটে পৌঁছে।
পরে জেলেরা যার যার বাড়িতে ফিরে যায়। কিন্তু উদ্ধারের তিন পর মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই জেলেদের কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এনে নিজের কৃতিত্ব নিতে আকস্মিক এক নাটকীয় প্রেস ব্রিফিং করেন থানার ওসি ফয়জুল আজীম নোমান। যেখানে দাবি করে জেলেদের উদ্ধারে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালায়। অভিযানের তাড়া খেয়ে দস্যুরা অপহৃত ১৯ জেলেকে ছেড়ে বাধ্য হন। এরপর থেকে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল সর্বত্র।
এসএস