• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রূপগঞ্জে ডন সেলিমের বিরুদ্ধে আড়ৎ দখল করে চাঁদাবাজির অভিযোগ


সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম
রূপগঞ্জে ডন সেলিমের বিরুদ্ধে আড়ৎ দখল করে চাঁদাবাজির অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে আলোচিত ক্যাসিনো সম্রাট সেলিম প্রধান ওরফে ডন সেলিমের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি ও হুমকির মুখে দিন যাপন করছেন বিসমিল্লাহ আড়তের ব্যবসায়ীরা। এই বিষয়ে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ সহ মামলা ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করছেন বলে জানিয়েছেন আড়ৎ মালিক ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) গাউছিয়ায় সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে ডন সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন আড়ৎ মালিক মুজিবর রহমান।

সেলিম প্রধানের সাথে চুক্তিবদ্ধ বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেলিম প্রধানের ১৬ বিঘা খালি জমি ১০ বছর মেয়াদে তারা ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়, যা ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০৩০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ এবং ২০২১ সালের পহেলা এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে মর্মে চুক্তিপত্রে উল্লেখ আছে।

তিনি বলেন, চুক্তির শর্ত মোতাবেক সেলিম প্রধানকে জামানত বাবদ আমি ৬০ লাখ টাকা প্রদান করি এবং পরবর্তীতে আরও ১০ লাখ টাকা প্রদান করি এবং চুক্তিপত্রের শর্ত মোতাবেক ওই জমি বালি দিয়ে ও ভরাট করি।

এরইমধ্যে পরপর দুইবার আড়ৎ থেকে তার সন্ত্রাস বাহিনী নিয়ে অবৈধভাবে দখল, চাদাবাজি সহ বিসমিল্লাহ আড়ৎদার ব্যবসায়ীদেরকে হুমকি ও জীবন নাশের ভয়-ভীতি দেখায়।

এ বিষয়ে আমরা রূপগঞ্জ থানা ও প্রশাসনে অভিযোগ গ্রহণ করলে সেলিম প্রধানের সন্ত্রাস বাহিনীর দুই চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করে আইনি হেফাজতে নেয় আইনশৃংক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনী। এখন পুণরায় আমাদের ফোনে এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মারফৎ জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন ও আড়ৎ পুণরায় বেদখল করার পায়তারা করছে। এতে আড়ৎতের বিশাল ক্ষতি হচ্ছে।

এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় প্রশাসনসহ পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এদিকে সেলিম প্রধানের হুমকির সম্মুখিন হয়েছেন আড়তের ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সেলিম প্রধান তাদের কাছে ২ লাখ-৩ লাখ করে চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দিলে দোকান খোলা যায় না। অনেকে স্বাধ্যমতো ধার দেনা করে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা দিয়েছেন। অনেকে দাবিকৃত পুরো টাকাও দিয়েছেন। তারপরও কিছুদিন পর পর এমন হুমকি পাচ্ছেন তারা।

জানা যায়, এর আগে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করেছিলো র‍্যাব। এরপর তার বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। বর্তমানে এসকল মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সেই সাথে সেলিম প্রধান জামিনে রয়েছেন। আর দুদকের একটি মামলায় ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল রায় দিয়েছেন আদালত। তাতে অবৈধ ভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!