লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যা নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াছমিনের পদত্যাগের দাবিতে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ লিটনের পক্ষ নিয়ে ফরিদার পদত্যাগ চেয়েছে। অন্য অংশ ফরিদার পক্ষ নিয়ে লিটনের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এ দাবিতে শিক্ষার্থীরা বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পৃথকভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়ে শতাধিক যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে এ সড়কে চলাচলকারীদের।
এরআগে শিক্ষার্থীরা দুটি অংশ বিভক্ত হয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক লিটন ও ফরিদার পক্ষ-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। পরে মিছিল নিয়ে তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়।
শিক্ষার্থীদের একটি অংশের অভিযোগ, লিটন বিভিন্নভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আয়াকে ধর্ষণের অভিযোগও তোলে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশের অভিযোগ, ফরিদার কাছে প্রাইভেট না পড়লে নানান অজুহাত দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। একইসঙ্গে সহকর্মী অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে তিনি খারাপ আচরণ করে আসছেন। গত ২১ নভেম্বর ফরিদার অসাধাচরনের ঘটনায় বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক শাহনাজ আক্তার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক লিটন ও ফরিদার ঘটনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। বুধবার বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু লিটন ও ফরিদা বিদ্যালয়ে এসে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করে। এরপরই দুই শিক্ষকের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষুব্দ হয়ে শিক্ষার্থীরাও বিবাধে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে লিটন ও ফরিদার পদত্যাগের দাবিতে মিছিল নিয়ে ডিসি অফিসের সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে।
পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসা ঘটনাস্থল এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন। পরে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
বক্তব্য জানতে সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াছমিনকে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে তিনি বিদ্যালয় থেকে চলে গিয়ে গা ঢাকা দেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, শিক্ষক ফরিদা ও আয়া আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রায়ই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তারা। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রাইভেট পড়ানোকে কেন্দ্র করে লিটন ও ফরিদার সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এতে দু’জনই একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলে। এখন তারা তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসা বলেন, জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুই শিক্ষককেই কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হবে।
এসএস