• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

পর্যটকে ভরপুর সেন্টমার্টিন, দ্বীপে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য


সাজন বড়ুয়া সাজু, কক্সবাজার ডিসেম্বর ৯, ২০২৪, ০২:২৬ পিএম
পর্যটকে ভরপুর সেন্টমার্টিন, দ্বীপে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য

কক্সবাজার: বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন।দীর্ঘদিন পর এবার পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে দ্বীপটি। এতে করে  মুখে হাসি ফুটেছে দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দার।

গেল কয়েকদিন ধরে সেন্টমার্টিনে নিয়মিত যাত্রা করছে পর্যটকবাহী জাহাজ।পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, পর্যটক আগমনে প্রাণ ফিরবে দ্বীপের, চাঙা হবে সব পর্যটন ব্যবসা। দূর হবে আর্থিক অনটন।

তবে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে সব জাহাজ চলাচলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন মাত্র দুই হাজার পর্যটক রাত্রিযাপনের সুযোগ পাচ্ছেন।

পর্যটকের সংখ্যা বাড়লে দ্বীপবাসী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এখন কক্সবাজার থেকে জাহাজ এসে এক/দুই ঘণ্টার বেশি থাকতে পারে না। বলতে গেলে এখন জাহাজ ভ্রমণ হচ্ছে।

ফেব্রুয়ারিতে পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে পর্যটন কার্যক্রম। সরকারি এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য দ্বীপবাসী এবং পর্যটন সংশ্লিষ্টরা দাবি জানিয়েছেন।

সেন্টমার্টিনের স্থায়ী বাসিন্দা ও মুদির দোকানী আবিদ আলম জানান, মৌসুম এলে ভ্যান ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস সেন্টমার্টিনে আসেননি কোনো পর্যটক। এতে অনেক কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে তার পরিবারকে। তবে এখন দ্বীপে পর্যটক আসায় তৃপ্তি মিলেছে। তাই দ্রুত টেকনাফ থেকে গেলবারের মতো আট/নয়টি জাহাজ চলাচলের কথা বলেন।  

দ্বীপের বাসিন্দা হোটেল মারমেইডের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, পর্যটক না আসায় দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন দ্বীপে পর্যটক আসতে শুরু করায় অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি, এখন খুব ভালোভাবে সংসার চালাতে পারব।

শুধু তারা নন, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে গত পহেলা ডিসেম্বর পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার পর প্রাণ ফিরেছে দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যে। কর্মচাঞ্চল্য এসেছে পর্যটন নির্ভর সব ব্যবসায়। তবে এখনো তুলনামূলক কম। অনেক পর্যটক দ্বীপে এসে রাত্রিযাপন করছেন।

হোটেল সি-প্রবালের পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর দ্বীপে পর্যটক আসছেন। সরকারের বিধিনিষেধের কারণে অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে হোটেলেও। সোমবার হোটেলে ১০টি রুম বুকিং রয়েছে। আস্তে আস্তে বাড়ছে পর্যটকের চাপ। আমরা পর্যটকদের সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করি সব সময়। আশা করি, এ মৌসুমের বাকি সময় বেশ ভালো কাটবে।

গেল রোববার সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসা সিলেটের ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেন, সেন্টমার্টিনে আসার স্বপ্ন ছিল।এখন দ্বীপে এসে খুব ভালো লাগছে। তবে কক্সবাজার থেকে ছয়/সাত ঘণ্টার ভ্রমণ কষ্টকর হচ্ছে। জাহাজ চলাচল টেকনাফ থেকে হলে খরচ-সময় বাঁচবে এবং আরামদায়ক হবে। এখন দ্বীপের জেটির অবস্থা খুবই খারাপ, সেটিও সংস্কার করা দরকার। আমরা দ্রুত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর দাবি জানাচ্ছি। 

সেন্টমার্টিনের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব জানালেন, প্রয়োজনে সামনে চার মাস জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে দ্বীপবাসী, ব্যবসায়ী ও পর্যটকরা আরও খুশি হবেন।


টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, সরকারের বিধিনিষেধ ও নিয়মাবলী মেনে এখন কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন তিন থেকে চারটি জাহাজ আসছে। মৌসুমের প্রথমদিন আসা পর্যটকদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, আগত পর্যটকরা যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন। সেই কারণে জেটিঘাটসহ বিভিন্ন স্পটে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!