- ঢাকা
- বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে দাফনের ৬১ দিন পর আদালতের নির্দেশে সোহান (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মেফতাহুল হাসানের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ সদর উপজেলার নগরবাথান গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে সোহানের মরদেহ উত্তোলন করে। সোহান ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় সোহানের। ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে তার মরদেহ একটি মহল ঝিনাইদহের নগরবাথান গ্রামে দাফন করে। লাশ দাফনের পর সোহানকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার হলে তার বাবা শহিদুল ইসলাম ঝিনাইদহের একটি আদালতে ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করলে ঝিনাইদহ সদর আমলি আদালতের বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
সোহানের মা সুন্দরী খাতুন অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে নগরবাথান গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সাকিব (২৭)। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়।
মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সাকিব ও তার বন্ধুরা সোহানকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকার ৩শ’ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহিদুল ইসলাম ছেলেকে বাড়িতে ফেরার জন্য ফোন করলে সোহান জানায়, সে খুব ঝামেলায় আছে। এরপর সোহানের পিতা সাকিবকে ফোন করে। এ সময় ফোন ধরে সাকিব গালিগালাজ করে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সোহানের পিতাকে ফোন করে জানানো হয় সোহান হাসপাতালে। খবর পেয়ে সোহানের পিতা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান সাকিবের দুই ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা খাতুন সেখানে উপস্থিত।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকতেই সাকিবের পিতা আব্দুল আজিজ তাকে ফোন করে কোন ঝামেলা না করার জন্য হুমকি দেন। এছাড়া সাকিবের ফুফা আরব আলী তাকে শিখিয়ে দেন পুলিশ গেলে আমি যেন তাদের বলি সোহান দুর্ঘটনায় মারা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, আসামি সাকিবের ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা ঢাকায় মানুষের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির ব্যবসা করে। এই অপকর্ম করে তারা ইতিমধ্যে ঢাকা ও ঝিনাইদহ শহরের একাধিক স্থানে বহুতল ভবন তৈরী ও জায়গা জমি কিনেছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ গোয়েন্দা বিভাগের এসআই শরীফ জানান, আদালতে এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ফলে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে বোঝা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।
এসএস
