কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কুমারটারী গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী ও আকর্ষণীয় বউ-শাশুড়ির মেলা। পারিবারিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এই মেলার আয়োজন করে ওমেন ইনিশিয়েটিভস ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (W4CD)। এটি বাস্তবায়ন করে উদয়াঙ্কুর সেবা সংস্থা (ইউএসএস) এবং সহযোগিতা করেছে একশনএইড বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এই মেলা সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করার অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেলার মূল লক্ষ্য ছিল বউ ও শাশুড়ির মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন। পরিবারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গ্রামীণ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে মেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ছিল, বল নিক্ষেপ, বেলুন উড়িয়ে বল কুড়ানো, বউ-শাশুড়ির শক্তি পরীক্ষা, বোতলের পানি ফেলানো, এছাড়াও আদর্শ পরিবারের জন্য ছয় জনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এসব আয়োজন শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়।
বউ ও শাশুড়িরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন, যা মেলায় প্রাণবন্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাদের উৎসাহ ও আন্তরিকতা প্রমাণ করে, সম্পর্কের জটিলতা কাটিয়ে উঠতে পারস্পরিক বোঝাপড়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্পন্সরশিপ অফিসার বিমল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘বউ-শাশুড়ির মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলে তা পুরো পরিবারকে অশান্তির দিকে ঠেলে দিতে পারে। এই মেলার মাধ্যমে পরিবার ও সমাজে ঐক্য ও সম্প্রীতি স্থাপনের বার্তা দেওয়া হয়েছে।’
স্পন্সরশিপ সহকারী আরিফা শিমু বেগম বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ শুধু পারিবারিক সম্পর্ক নয়, বরং সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এছাড়াও মেলায় উপস্থিত ছিলেন মবিলাইজার রুহুল আমিন, গীতা রানী পাল, সিএফ যমুনা রাণী, আরএফ আঞ্জুমান আরা বেগম এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বউ-শাশুড়ির মেলার মতো উদ্যোগ গ্রামীণ সমাজে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু আনন্দের নয়, সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন আরও বড় পরিসরে ও নিয়মিত করার আহ্বান জানান স্থানীয়রা।
এসএস