ঢাকা: মুন্সিগঞ্জে শীতার্ত অসহায় সহস্রাধিক মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল উপহার দিয়েছে বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ কল্যাণ সমিতি। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোবহান আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডে এই কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় টুঙ্গিবাড়ী উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনদের হাতে অসহায় মানুষদের প্রদানের জন্য এক হাজার পিস কম্বল তুলে দেন বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ কল্যাণ সমিতির সদস্যরা।
শীত বস্ত্র উপহার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনুছ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুছ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনুছ গ্রুপের পরিচালক কামরুল ইসলাম, জাতীয় বক্সিং দলের সাবেক বক্সার মনোয়ার আলম, বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য মো. সাখাওয়াত হোসেন আশিক, মো. মনির, সামছুদ্দিন সুমন, ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল আলম প্রমুখ।
ড. মোঃ ফরিদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ তাহিয়াত হোসেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনেরা বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতিকে এমন জনকল্যাণকর কাজের জন্য সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতি জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষের জন্য কাজ করে আসছে। অরাজনৈতিক এই সমিতিটি যদি তাদের এমন কার্যকলাপ ধরে রাখতে পারে, তবে সমাজের চিত্র পাল্টে যাবে। তাদের দেখাদেখি অন্যান্য ব্যক্তিরাও মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার আগ্রহ দেখাবে। এতে সমাজের প্রতিটি স্তরে উন্নতি হবে। এসময় বক্তারা বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতির কাছে সামাজিক কল্যাণকর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তবে মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতি পুরোপুরি একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এই সমিতির লক্ষ্য সমাজের অসহায় মানুষদের সাধ্যমত সহযোগীতা করা। কারোর একার পক্ষে হয়তো সবাইকে সহযোগীতা করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এই সমিতির সদস্যদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিনিয়ত আমরা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, এর আগেও আমরা বিগত বছরগুলোতে অসহায় মানুষদের কম্বল উপহার দিয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও শীতার্তদের কম্বল উপহার দেয়া হলো। হয়তো এই সামান্য উপহার অনেকের কাছে কিছুই নয়, কিন্তু যারা এই উপহার পাবে তাদের জন্য অনেক উপকারে আসবে।
তিনি বলেন, এর আগেও আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতদের নগদ অর্থ উপহার দিয়েছি। সামনে আরও কয়েকজনকে এই উপহার তুলে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে আমাদের সমিতির সদস্যরা সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে আহতদের তালিকা করেছে। পর্যায়ক্রমে সকল আহত-নিহতের পরিবারকে আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে আর্থিক উপহার তুলে দেয়া হবে।
মোহাম্মদ ইউনুছ আরও বলেন, আন্দোলনের আহত-নিহতদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হচ্ছে। আমাদের সমিতির মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃত হতাহতদের তালিকা করে জেলা প্রশাসনকে সহযোগীতা করার। কারন অনেকেই এই বিষয়গুলো জানে না। তারা যেন এই সহযোগীতা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এসময় মোহাম্মদ ইউনুছ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিক্রমপুর-মুন্সিগঞ্জ কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে স্থানীয় কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ সহ স্কুল ইউনিফর্ম সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ছাত্র আন্দোলনে আহত এক শিক্ষার্থীর মাঝে সমিতির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ উপহার তুলে দেয়া হয়। পরে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক ও সুধীজনের হাতে অসহায় মানুষদের উপহার দেয়ার জন্য এক হাজার পিস কম্বল তুলে দেন অতিথিরা।
এসএস