• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

জাহাজে সাত খুন নিয়ে রহস্য, কাগজে লিখলেন বেঁচে থাকা ব্যক্তি  


জেলা প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৯:৫৮ এএম
জাহাজে সাত খুন নিয়ে রহস্য, কাগজে লিখলেন বেঁচে থাকা ব্যক্তি  

চাঁদপুর: চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝিরচর এলাকায় থেমে থাকা একটি জাহাজ থেকে সোমবার বিকেল ৩টার দিকে পাঁচজনের মরদেহ এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে ২ জন মারা যান।

নিহত সাতজনের মধ্যে ছয়জনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল ও মাজেদুল এবং লস্কর সবুজ শেখ। এদের বাড়ি নড়াইল ও ফরিদপুর জেলায়।

এদিকে বেঁচে থাকা একজন হাসপাতালে নেওয়ার পর কাগজে লেখেন তার নাম জুয়েল। গলা আংশিক কাটা থাকায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

নৌ পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের আরও বলেন, জাহাজের মালিকের বক্তব্য অনুযায়ী সারবোঝাই জাহাজটি চট্টগ্রামের কাফলু থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে যাচ্ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি আজ সিরাজগঞ্জে এসে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু জাহাজের খবর না পেয়ে জাহাজের মালিক অন্যান্য জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে অন্য জাহাজের কর্মচারীর মাধ্যমে তার জাহাজটি চাঁদপুরে মেঘনা নদীর পাড়ে আছে শুনে ৯৯৯-এ পুলিশকে জানান।

খবর পেয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক এবং কোস্ট গার্ডের দুটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নৌ পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের যৌথ অবস্থানে নিহতদের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়।

পেছনে রহস্যের ইঙ্গিত রয়েছে
শুরুতে বিষয়টি ডাকাতি বলে মনে করলেও ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এটিকে ডাকাতির ঘটনা মনে করছেন না। এখানে ভিন্ন কিছু রয়েছে বলে জানালেন তারা। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, সিআইডি ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা জানান, ‘চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক স্যারের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই ওসিসহ ওখানে যাই। গিয়ে দেখলাম, জাহাজের মেঝেতে পড়ে ছিল রক্তাক্ত একটি চাইনিজ কুড়াল। এটি ছিল সারের জাহাজ। অবাক করা বিষয় একটি বস্তাও খোয়া যায়নি। কেউ ডাকাতি করতে এলে তো সার বা জাহাজ কোনও একটি নিয়ে যাবে। কিছুই নেয়নি। আবার জাহাজের কর্মীদের ঘুমন্ত অবস্থায় কোপানো হয়েছে। অবস্থা দেখে বোঝা যায়, তাদের হত্যার পর পর বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে গেছে একই বিছানায়। সবাই নিজ নিজ কক্ষে একই কায়দায় হত্যার শিকার হওয়ায় কাউকে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি জানান, ‘জাহাজের কোনও মালামাল খোয়া যায়নি। সার কী পরিমাণ ছিল, তা মালিকপক্ষ জানালে নিশ্চিত হওয়া যাবে। সারের বস্তাগুলো সাজানো-গোছানো দেখেছি। সেগুলো ঠিকমতো আছে। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, জাহাজ থেকে কিছুই চুরি হয়নি। সাত জনকে হত্যা করা হয়েছে। একজন জীবিত থাকলেও মৃতপ্রায়। কিছু রহস্য তো আছেই। আসলে কী ঘটেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

এম

Wordbridge School
Link copied!