নড়াইল: চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা এমভি আল-বাখেরা জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাতজনের মধ্যে নড়াইলের আমিনুর রহমান মুন্সী (৪৮) ও সালাউদ্দীন ফকিরের (৪০) মৃতদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত নয়টার দিকে আমিনুরের এবং দশটার দিকে সালাউদ্দিনের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের রাতেই দাফন করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার আমিনুর নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের পাঙ্খারচর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। সে আল বাখেরা জাহাজের সুকানি ছিলেন। অন্যদিকে সালাউদ্দিন ছিলেন ইঞ্জিন চালক। তিনি একই উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এগারোনলী গ্রামের আবেদ উদ্দীন ফকিরের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে প্রায় ১২ বছর ধরে জাহাজে কাজ করছিলেন আমিনুর। গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) গ্রামের বাড়ি নড়াইল থেকে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। এবার ছুটিতে বাড়ি ফিরে বোনের দেওয়া জমিতে নতুন ঘর তোলার কথা ছিলো তার। কিন্তু ৪ দিনের ব্যবধানে তার বাড়িতে ফিরেছে তার নিথর দেহ। কোনোভাবেই এ শোক সইতে পারছেন না তার পরিবারের সদস্যরা।
আমিনুরের স্ত্রী পপি বেগম বলেন, ‘শুক্রবারে রাতে আটটার দিকে আমি স্বামীকে বাসে উঠায় দিয়ে আসছিলাম। এক সপ্তাহ পর আসার কথা ছিলো.. আর আসল না। আমার স্বামীরে যারা মারছে, আমি তাদের বিচার চাই৷ স্বামী ছাড়া আমার আপন কেউ ছিলো না। ’
অন্যদিকে সালাউদ্দিন ২০ বছর ধরে জাহাজে চাকরি করছেন। অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। মা ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার ছিলো তার। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় দিশেহারা তার পরিবার।
সালাউদ্দিনের ছেলে নাইম ফকির বলেন, ‘আব্বুর আয় দিয়েই আমাদের পরিবার চলতো। এইভাবে যদি মেরিন ডিপার্টমেন্টে চলতে থাকে, আজকে আমাদের ক্ষতি হইছে কালকে আরেকজনের হবে। আজকে যেমন আমরা রাস্তায় নামছি কালকে আরেক পরিবার রাস্তায় নামবে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’
এসএস