মাদারীপুর: কালকিনিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্য ও তার ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাদুরী এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ইউপি সদস্য আতাউর রহমান আক্তার শিকদার (৪৮) ও তার ছেলে মারুফ শিকদার। (২০)। এই দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া সংঘর্ষে আহত ইউপি সদস্যের কর্মী সিরাজুল ইসলাম চৌকিদার (৩৫) ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান। আক্তার শিকদারের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনার মামলায় দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলেন আক্তার শিকদারসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার ভোরে আক্তার শিকদারের বসতঘরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ খবর শুনে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ভোরে লোকজন নিয়ে এলাকায় আসেন আক্তার ও তার ছেলে মারুফ।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্তারের ওপর হামলা চালান। বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষের সময় আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ শিকদারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
আহত জব্বার ও জুয়েলসহ অন্যরা কালকিনির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। বাকি আহতদের নাম জানা যায়নি।
নিহত আক্তার শিকদার কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের তিনবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বাশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন।
এদিকে ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি থাকায় অতিরিক্ত সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন আছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
নিহত ইউপি সদস্য আক্তার শিকদারের বাবা মতিন শিকদার বলেন, আমার ছেলে ও নাতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন চেয়ারম্যান সুমন ও তার লোকজন। এ ঘটনায় আমাদের আরও এক কর্মী মারা গেছেন। এর বিচার চাই।
কালকিনির বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। শুনেছি এলাকার অন্য দুটি পক্ষ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমিও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।
কালকিনি থানার এসআই সুশিল বলেন, ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ও তার ছেলে মারুফ নিহত হয়েছেন। এছাড়া ঢাকা নেওয়ার পথে আরও একজন মারা গেছেন।
আইএ/এআর