লালমনিরহাট: হিমালয়ের কোল ঘেষা জেলা লালমনিরহাটে আবারো ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডায় জেঁকে বসেছে ভারী শীত। গত দুদিন ধরে এ জেলায় কোথাও সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল আয়ের মানুষজন। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকটা কষ্টে পড়েছে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বেলা গড়িয়ে ঘড়িতে দুপুর ১২টা বেজে উঠলেও কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। এদিকে তীব্র এই শীতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগে শিশু ও বয়স্করা ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তীব্র শীত নিয়ে জানতে চাইলে হাতীবান্ধার উপজেলার ভ্যানচালক এনামুল হোসেন বলেন, এই ঠান্ডায় কোন লোকজন নেই তাই ভ্যান নিয়ে বসে আছি। দিন গেলে কিস্তি দিতে হবে। বর্তমানে পরিবার চালানো অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালীগঞ্জের কাকিনা চাপারতল এলাকার দিনমজুর কবির হোসেন বলেন, খুব ঠান্ডা, বাড়ি থেকে বাহির হওয়া যাচ্ছে না। কুয়াশায় কিছু দেখা যায়ছোল (যাচ্ছে) না। তারপরও আমরা কাজের সন্ধানে বের হয়েছি। পেটতো আর ঠান্ডা বোঝে না বাহে। কালীগঞ্জের ভোটমারী ইউনিয়নের তিস্তার চরের কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, এই ঠান্ডায় কাজকাম করা যায় না। হাত গুটিয়ে আসে। খুবই কষ্টের মধ্যে আছি।
হাতীবান্ধা মেডিকেল আবাসিক অফিসার আনারুল হক বলেন, কয়েকদিন শীত কম থাকলেও দুদিন থেকে শীত বাড়ার সাথে সাথেই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা জনিত রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য শিশু-বৃদ্ধের খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোন প্রকার ঠান্ডা না লাগে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ১ মাস ধরে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এসআই