লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে জমি দখলে নিতে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণে বাঁধা দেওয়ায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে নুরুল আমিন খোকন (৭০) নামে এক প্রবাস ফেরত বৃদ্ধের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম শাহ আলম। ঘটনার সময় খোকনের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুঁড়ে দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়। এতে ভয়ে তিনি পরিবার নিয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবার সু্ষ্ঠু বিচারের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে সাংবাদিকদের ঘটনাটি জানিয়েছেন। এর আগে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রামে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শাহ আলম দত্তপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি।
অভিযোগ রয়েছে, গত ৬ নভেম্বর দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা এলাকায় জোহরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে খোকনকে শাহ আলম মারধর করে হাত ভেঙে দেয়। এখনো তার হাত ঠিক হয়নি। তখন ৬ লাখ টাকা না দেওয়ায় শাহ আলম তার ওপর হামলা করে।
ভূক্তভোগী খোকন দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী ছিলেন। অভিযুক্ত শাহ আলম তার ছোট ভাই। তারা করইতলা এলাকার মৃত তবারক উল্যার ছেলে।
ভূক্তভোগী পরিবার জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে খোকনের জমি দখলে নিতে বিএনপি নেতা শাহ আলম বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করে আসছে। সম্প্রতি এক রাতে বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলে শাহ আলমের লোকজন। পরে সেখানে একটি টিনসেট ঘরও জোরপূর্বক নির্মাণ করে তারা। শুক্রবার ফের ওই জমি থেকে মাটি কাটা ও আরেকটি ঘর নির্মাণ করতে গেলে খোকনরা তাদেরকে বাঁধা দেয়। এতে শাহ আলমসহ তার অপর ভাই শাহ জামাল বাচ্চু লোকজন নিয়ে খোকনদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে তার বাসার দরজায়-জানালায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে। পরে ৯৯৯ এ কল দিলে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নুরুল আমিন খোকন বলেন, জোরপূর্বক শাহ আলম ও বাচ্চু আমার জমিতে ঘর নির্মাণ করছে। বাঁধা দেওয়ায় আমার ওপর হামলা করা হয়। শাহ আলমসহ তার লোকজন আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমি ভয়ে আছি।
খোকনের মেয়ে কুলসুম আক্তার বলেন, খাবর পেয়ে বাবা-মাকে দেখতে এসেছি। এখন আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের বাসা ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা রান্নাও করতে পারিনি।
অভিযোগ অস্বীকার করে শাহ আলম বলেন, আমার শ্রমিকদের ওপর খোকনের দুই মেয়ে মরিচের পানি ছোঁড়ে। খবর পেয়ে আমি গিয়ে তাদের রেখে দেওয়া ওই পানি তাদেরকে ছুঁড়ে মারি। তারা আমার এক শ্রমিকের হাতের আঙ্গুল ভেঙেছে। খোকনের ঘরে হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনা সত্য নয়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ বলেন, খোকনদের জিম্মি করে রাখার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাটি নিয়ে উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। বৈঠক শেষে এ বাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইএ