• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩০

আ.লীগ নেতার সম্পত্তি ক্রোক করে ব্যানার ঝুলিয়ে দিলো প্রশাসন


লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
আ.লীগ নেতার সম্পত্তি ক্রোক করে ব্যানার ঝুলিয়ে দিলো প্রশাসন

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানের সম্পত্তি ক্রোক করে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের একটি টিম গিয়ে তার কয়েকটি ভবনসহ স্থাবর সম্পত্তি বুঝে নিয়ে তাতে ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র দায়রা জজ মো. আদীব আলী সুমন খানের সম্পত্তি ক্রোকের এ নির্দেশ দেন।

এছাড়াও গত অক্টোবরে সুমন খান এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দুইশ একচল্লিশ কোটি ঊননব্বই লাখ বিশ হাজার সত্তর টাকা উপার্জন করে ব্যাংকে রাখায় সিআইডি লালমনিরহাট জেলার এএসপি মোহাম্মদ আব্দুল হাই সরকার বাদী হয়ে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেন।

ওই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। গত ১১ নভেম্বর রাতে লালমনিরহাট থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় তিস্তা সেতুর টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় লালমনিরহাট জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়াও তাকে আরও একটি মামলায় আরও ৩দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে সুমন খানকে কারাগারে পাঠানো হয়। আওয়ামীলীগ নেতা সুমন খানের বিরুদ্ধে হত্যা, অর্থ আত্মসাতসহ মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। 

জানা গেছে, চোরাচালান, চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক, স্বর্ণ পাচার, হুন্ডি ব্যবসা আর হুমকি-ধামকিতে ১৫ বছরে কয়েকশত কোটি টাকা কামিয়েছেন লালমনিরহাটের আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান। পেটোয়া বাহিনী গড়ে তুলে হয়েছিলেন অপরাধ চক্রের গডফাদার। জ্ঞাত আয়ের বাইরে সুমনের ব্যাংক হিসাবে মিলেছে মোট ৪৬৫ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য।

সুমন খান ছিল লালমনিরহাটবাসীর কাছে এক আতঙ্কের নাম। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে শুরু করেন মাদক, ভারতীয় গরু চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসা। ২০০১ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে বিএনপিতে যোগ দেন সুমন। ২০০৯ সালে পুনরায় ফেরেন আওয়ামী লীগে। নানা অপকর্ম করে গত ১৫ বছরে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক।

সম্প্রতি সুমন খানের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৪৬৫ কোটি টাকা ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য পায় সিআইডি। যার মধ্যে ১৮৬ কোটি টাকার সন্ধান মেলে তার কর্মচারী তৌকির আহমেদ মাসুমের ব্যাংক হিসাবে। পরে মামলা করে সিআইডি।

লালমনিরহাট জেলার এএসপি মোহাম্মদ আব্দুল হাই সরকার জানান, সিআইডির মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় আসামি সুমন খানকে বিজ্ঞ আদালত ১৭ নভেম্বর শ্যোন অ্যারেস্ট মঞ্জুর করেন। ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৩ দিনের সিআইডি কর্তৃক পুলিশ রিমান্ডে ছিলেন। এরপর গত ১ ডিসেম্বর বিজ্ঞ আদালত তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, সম্পত্তি ক্রোক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে রিসিভার নিয়োগ করে আদেশ দেন।

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জি আর সারোয়ার জানান, "আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান বাড়ি, নির্মাণাধীন বাড়ি ও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো বুঝে নিয়েছি এবং সেগুলোকে সরকারি মালিকানাধীন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। তবে এখন থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হবে।"

আইএ

Wordbridge School
Link copied!