• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩০

ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎ শিল্পের কারিগররা


নীলফামারী প্রতিনিধি  ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫, ০৩:৫৩ পিএম
ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎ শিল্পের কারিগররা

নীলফামারী: ভালো নেই নীলফামারীর মৃৎ শিল্পের কারিগররা। প্লাষ্টিক আর এ্যালুমিয়ামের প্রভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির তৈরী তৈজষপত্রের। জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকে এখন বাপ-দাদার পেশা বদল করছেন।

নীলফামারী সদর ও সৈয়দপুর উপজেলায় বসবাস কয়েক’শ কুমোর সম্প্রদায়ের। বংশপরোমপমায় তারা এ পেশায় থেকে জীবিকা নিবার্হ করে আসছে। এক সময় মাটির তৈরি জিনিষপত্রের ব্যাপক কদর ছিল। মাটির জিনিসপত্র তৈরিতে কুমার পাড়ায় মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটাতেন। 

নিপুণ হাতে তৈরি করতেন রান্না ও গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন রকমের হাঁড়ি-পাতিল, সরা, থালা, বাটনি, দোনা, ঝাঁজর, মটকি, চাড়ি, কোলকি, কড়াই, কুয়ার পাট, মাটির ব্যাংক, মাটির তৈরি রঙিন পশুপাখি, ফুলের পাত্র, পানি বর্জ্য, জল পাইপ, ইটসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য । কিন্তু বর্তমানে প্লাষ্টিক ও এ্যালুমিয়াম সামগ্রীকের প্রভাবে কদর হারিয়েছে মাটির তৈরি জিনিষপত্রের। অনেকটা বাধ্য হয়ে এখন অনেকে বাপ-দাদার পেশা ছাড়ছেন।

অন্য কোনো পেশা না জানায় এখনও যারা এ পেশায় রয়েছেন তারা মাটির তৈরি পণ্যের ধরণ পরিবর্তন করেছে। তারা হাড়ি পাতিলের পরির্বতে এখন  শিশুদের রকমারি খেলনা  ও টাইলস্ তৈরি করছেন। বিভিন্ন স্কুল কলেজ ছাড়াও গ্রামগজ্ঞের মেলায় বিক্রি করছেন এসব খেলনা।

মৃৎশিল্পের কারিগররা জানান একসময় মাটির তৈরির রকমারী তৈজষপত্র দিয়েই মানুষের পরিবারের চাহিদা পূরণ হতো। তখন আমরা এসব পণ্য পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করে পরিবার নিয়ে ভালো ভাবে চলতে পারতাম। 

কিন্তু এখন প্লাস্টিক ও অ্যালুমেনিয়াম, সিরামিকসের চাপে আমরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছি। সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেল পুকুর ইউনিয়নের চওড়া পালপাড়ার অমল চন্দ্র পাল বলেন, আগে মৃৎশিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা চলত। 

এখন আমরা বিভিন্ন পূজাপার্বণে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি মাঠে মজুরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। মৃৎশিল্প নির্ভর ৩২০টি পরিবারের মধ্যে প্রায় ২০০টির বেশি পরিবার তাদের বংশীয় পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশা শুরু করেছে বলে তিনি জানান।  

নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দুপুকুর কুমার পাড়ার মনমোহন পাল বলেন, একসময় জমি থেকে অল্প টাকা দিয়ে এঁটেল মাটি ক্রয় করতে পারতাম। তবে এখন দেশে বেড়েছে ইটের ভাটা। যার কারণে মাটি সংগ্রহ করাটাও হাতের নাগালের বাহিরে চলে গেছে। অথচ মাটির তৈরী জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক বাড়েনি। এ জন্য বেশি দামে মাটি ও খড়ি কিনে এসব জিনিসপত্র তৈরি করে আগের মতো লাভ হয় না।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জানান প্লাষ্টিক আর এ্যালুমিয়ামের প্রভাবে কদর কমেছে মৃৎশিল্পের। যথাযথ পৃষ্টপোষকতার অভাবে প্রাচীন এই শিল্প যাতে হারিয়ে না যায় সে দিকে সরকারিভাবে নজর দেয়া হবে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!