• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩০

মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় ১০ তরুণ-যুবকের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি মার্চ ২০, ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় ১০ তরুণ-যুবকের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামে মাদকদ্রব্য বিক্রির প্রতিবাদ করায় ১০ তরুণ-যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে ফাঁসাতে ঘটনা সাজিয়ে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের তালিকাভূক্ত চিহ্নিত ‘মাদক ব্যবসায়ী’ আবুল কালাম জহিরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা। মামলাটিতে অজ্ঞাত আরও ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এতে গ্রামে গ্রেপ্তার আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। 

জহির চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের মুনছুর আহমেদের ছেলে। তার বিরুদ্ধে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায় ৫টি ও সোনাইমুড়ি থানায় একটি মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল ৪টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত পলাতক আসামি হিসেবে জহির চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জহির এলাকায় দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে এলাকায় মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছে। এজন্য ‘বাবা জহির’ হিসেবে এলাকা তার পরিচিত রয়েছে। তার কারণে স্থানীয় যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদকের কারণে এলাকায় প্রায়ই মারামারির ঘটনা ঘটে। মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর জহির বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী অঞ্চল চন্দ্রগঞ্জ আদালতে একাটি মামলা দায়ের করেন। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাত ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাড়ি ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়। 

মামলার এজাহার সূত্র জানা যায়, ১০ আগস্ট জহিরের বাড়িতে ভাঙচুর করে অভিযুক্তরা। এছাড়া ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনা উল্লেখ করা হয়। সেখানে তিনি নিজেকে প্রবাসী দাবি করেন। মামলাটি আদালতে আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এতে গত ১৮ নভেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রমজান আলী আদালতে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। জহিরের মামলায় অভিযুক্তরা হলেন মো. কাউছার, মিজান মল্লিক, মো. বাবু, ইমন, মো. শিহাব, মো. সিয়াম, মো. রিজন, মো. সাইফ, মো. সবুজ, ওয়াসিম ও অজ্ঞাত ১৫ জন। 

জহিরের বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল মান্নান মনা, মো. আব্দুল হাই ও লাকি বেগমসহ কয়েকজন জানায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর জহিরের বাড়িতে মুখোশধারী একদল লোক হামলা চালায়। মাদক ব্যবসা নিয়ে ঘটনাটি ঘটতে পারে। ১০ আগস্ট তার বাড়িতে কোন ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটি পুনরায় তদন্ত করে সত্যিকার অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। 

মামলায় অভিযুক্ত মিজান মল্লিক, মো. সবুজ ও মো. সিয়াম জানায়, মাদক বেচাকেনার প্রতিবাদ করায় জহির তাদেরকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মামলায় জড়িয়েছে। মামলার ভয়ে তারা এখন বাড়ি ছাড়া। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন তারা। 

আবুল কালাম জহির বলেন, অভিযুক্তরা আমার কাছে চাঁদা চেয়েছে। চাঁদা না দেওয়া দল বেঁধে মুখোশ পড়ে আমার বাড়িতে হামলা করে। আমার কয়েকজন লোক তাদেরকে আসার সময় দেখেছে। আমি ১২ বছর এলাকায় থাকি না। সৌদি ছিলাম, এখন চট্টগ্রাম থাকি। লক্ষ্মীপুরে কোন থানায় আমার বিরুদ্ধে মাদক মামলা নেই। নোয়াখালীর মামলাগুলোতে অজ্ঞাত হিসেবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।  

ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. রমজান আলী বলেন, তদন্তে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। তবে স্বাক্ষীরা ভয়ে স্বাক্ষ্য দেয়নি। বাদী জহিরের বিরুদ্ধে মাদক মামলা বা গ্রেপ্তারী পরোয়ানার বিষয়ে কিছু জানা নেই। জহির নিজেকে প্রবাসী বলে দাবি করেছেন। তবে কোন দেশে ছিলেন তা জানাতে পারেননি এ কর্মকর্তা। 

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ বলেন, জহিরের বিষয়ে আপাতত কোন তথ্য নেই। খোঁজ নিয়ে জানতে হবে। 

আইএ

Wordbridge School
Link copied!