Menu
ছবি : প্রতিনিধি
পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন চাষীরা।
শনিবার (২২ মার্চ) সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ জুড়ে পাকা গমের সোনালি আভা। বাতাসে দুলছে শস্যের মাথা, যেন প্রকৃতির এক অপরূপ দৃশ্য। চাষীদের কেউ গম কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউ বা জমিতে শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত।
গম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নভেম্বরের মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গমের বীজ বপণ করা হয় এবং মার্চের শেষের দিকে গম কাটা শুরু হয়। গমে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয়। সেচ ও সার কম লাগে তাই উৎপাদন ব্যয়ও কম। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং সঠিক পরিচর্যায় প্রতি বিঘায় ১২ থেকে ১৬ মন পর্যন্ত গম উৎপাদিত হয়। বাজার ভেদে প্রতি মন শুকনো গম এক হাজার ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।
এদিকে ধানের চেয়ে তুলনামূলক গমের দাম ভালো এবং কম খরচে অধিক আয়ের লক্ষ্যে গম আবাদে ঝুঁকছেন এ এলাকার চাষিরা।
উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের প্রধান পাড়া এলাকার কৃষক হৃদয় প্রধান বলেন, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়েছি, তাই খরচ কিছুটা কমেছে। ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি, সব কিছু ঠিক থাকলে বাজারের বর্তমান দর অনুযায়ী ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হবে।
দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মালচন্ডী এলাকার কৃষক জহিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছর ধরে গম চাষ করতেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে বিঘায় ১৩ থেকে ১৪ মন পর্যন্ত গম হয়। এক বিঘা জমিতে গম রোপন থেকে মাড়াই পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এখনো গম কাটেনি তবে বাজারে গমের দাম ভালো থাকায় আশা করছি ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে দেবীগঞ্জ উপজেলায় মোট ৬৫০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। এবছর বারি গম- ৩০, বারি গম- ৩২ এবং বারি গম- ৩৩ এই তিন জাতের গম চাষ করা হয়েছে। এছাড়া গমের চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৬০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে জনপ্রতি বিভিন্ন জাতের ২০ কেজি গমের বীজ, ১০ কেজি ড্যাপ এবং ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাঈম মোর্শেদ বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা চলতি মৌসুমে ১৫ মন পর্যন্ত ফলন পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সেই সাথে বাজারে ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এসআই
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT