• ঢাকা
  • সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩০

মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের মারধর: চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতাকে আসামি করে মামলা


দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি  মার্চ ২৮, ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের মারধর: চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতাকে আসামি করে মামলা

পঞ্চগড়: দেবীগঞ্জে পরিবারের অমতে বিয়ে করায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত চিলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। 

মামলায় চেয়ারম্যানের পাঁচ ভাইকে আসামি করা হয়। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন আব্দুস সাত্তার ওরফে ইঞ্জিল নামে এক ব্যক্তি। 

এর আগে গত সোমবার (২৪ মার্চ) ইউনিয়নের তিস্তাপাড়া এলাকা থেকে ইঞ্জিলের ছেলে মোস্তাকিম ও চেয়ারম্যানের মেয়ে সিফাতে সাদিয়া সুহা কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এর আগেও তারা উভয়ই বাসা ছাড়লে চেয়ারম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসেন।

২০২১ সালে তারা বিয়ে করেন এবং নিকাহ রেজিস্ট্রি করেন বলে সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনার দিন (সোমবার) পুনরায় মেয়েকে বাসায় খুঁজে না পেয়ে চেয়ারম্যানের ভাই ও লোকজন রাত আনুমানিক ৯টায় মোস্তাকিমের বাড়িতে গিয়ে তার ও সুহার অবস্থান জানতে চায়। 

তাদের অবস্থান সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে না পারায় মোস্তাকিমের মা ফরিদা বেগম, বাবা আব্দুস সাত্তার ও ছোট ভাই খোকনের চার মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী রেহেনা বেগমকে চেয়ারম্যানের ভাই নূর হোসেন তার বাসায় ডেকে নিয়ে গিয়ে তার ভাইরাসহ কয়েকজন মিলে সবার উপর শারীরিক নির্যাতন করে। এতে মোস্তাকিমের মায়ের দুই হাত ভেঙ্গে যায়। একই সাথে তার যৌনাঙ্গে লাঠি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করা হয়। খোকনকে ভাউলাগঞ্জ বাজারে তার কর্মস্থল থেকে ডেকে এনে বস্তাবন্দী করে মারধর করা হয়। 

পরে খোকনের শ্বশুর হোসেন আলী ৯৯৯ এ কল করলে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম তাদের উদ্ধার করে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ভোরে গুরুতর আহত চারজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। বুধবার (২৬ মার্চ) নির্যাতনে আঘাতজনিত কারণে রেহেনার গর্ভপাত হয়। পরে রেহেনা ও তার শ্বাশুড়িকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে খোকন ও তার স্ত্রী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সাত্তার ও তার স্ত্রী দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার তিনদিন পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়। এইদিকে মামলা দায়েরের পর থেকে নতুন শঙ্কায় ভুগছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। 

তাদের দাবি, আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে নিরাপদে থাকতে পারবেন কিনা সেই ব্যাপারেও তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন।

এই ঘটনায় সাংগঠনিক ভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি আব্দুল গণি বসুনিয়া বলেন, ঘটনাটি আমি পুরোপুরি জানি না। জেনে সাংগঠনিক ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন সুযোগ নেই।

দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আসামী গ্রেফতারে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
এআর

Wordbridge School
Link copied!