• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১
রাজশাহীতে চালের সিন্ডিকেট

কিছুতেই কমছে না চালের দাম


রাজশাহী ব্যুরো এপ্রিল ৫, ২০২৫, ০১:৩০ পিএম
কিছুতেই কমছে না চালের দাম

ফাইল ছবি

রাজশাহী: সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে চালের। সিন্ডিকেট চক্র পর্যাপ্ত মজুদ করে কৃত্রিম সংকট ঘটিয়ে চালের দাম বৃদ্ধি করছেন। অথচ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত চালও রয়েছে প্রচুর। এরপরও ঈদের ছুটির মধ্যে রাজশাহীতে চালের দাম বেড়েছে। ক্ষণেক্ষণে বাড়ছে চালের দাম। এতে অস্থিরতা বিরাজ করছে চালের বাজারে। ভোক্তাদের প্রশ্ন, পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকার পরও চালের দাম বাড়ছে কেন? অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্রের হাতে কি জিম্মি চালের বাজার? প্রশ্নের উত্তর মিলেছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেছেন, সিন্ডিকেট চক্রই নিয়ন্ত্রণ করছে চালের বাজার।

রোজার মাসে দুই দফা বাড়ে চালের দাম। সপ্তাহ দুয়েক আগে জিরাশাইল, নাজিরশাইল ও কাটারি আতপের দাম বাড়ানো হয়েছিল। দাম বাড়ার তালিকায় এবার নতুন করে মোটা সেদ্ধ চাল ও মিনিকেট আতপ চাল যোগ হয়েছে। রাজশাহীতে পাইকারিতে এই পাঁচ ধরনের চালের কেজিতে নতুন করে ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের বাজার অস্থির হওয়ার পেছনে মিল কর্তৃপক্ষের সিন্ডিকেটকেই দুষছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বোরো মৌসুমের চাল বাজারে এলে দাম কমে আসবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী মহানগরীর চালের আড়ৎ কুমারপাড়া ও কাদিরগঞ্জে রোজার দ্বিতীয় সপ্তাহে জিরাশাইল, নাজিরশাইল ও কাটারি আতপ চালের দাম কেজিতে ৬ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে কেজিতে ২ টাকা বেড়ে জিরাশাইল ৮৪ টাকা ও নাজিরশাইল ৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া কেজিতে নতুন করে ১ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি কাটারি আতপ ৮৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে পাইকারিতে মোটা সেদ্ধ চাল ও মিনিকেট আতপ চাল কেজিতে ১ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা সেদ্ধ চাল ৪৯ টাকা ও মিনিকেট আতপ চাল ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পাইকারিতে দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। বর্তমানে রাজশাহীতে খুচরায় প্রতি কেজি জিরাশাইল ৯০ টাকা, নাজিরশাইল ৯৪ টাকা, কাটারি আতপ ৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া খুচরায় প্রতি কেজি মোটা সেদ্ধ চাল ৫৫ টাকা ও মিনিকেট আতপ চাল ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব চালের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে শনিবার (৫ এপ্রিল) চাল কিনতে আসা আজিবর রহমান বলেন, অন্য ভোগ্যপণ্যের দাম খুব একটা না বাড়লেও চালের দাম সাধারণ মানুষকে ভোগাচ্ছে। ভালো মানের এক কেজি চাল কিনতে গেলে ৮০ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে। এটা খুব দুঃখজনক। চালের বাজারে সুষ্ঠু তদারকি হচ্ছে না। অভিযান চালিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা দরকার বলে জানান তিনি। 

চাল বিক্রেতা নিজাম উদ্দিন বলেন, মিলাররা একটি শক্ত সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তারা দফায় দফায় চালের দাম বাড়াচ্ছেন। আমাদের সেখান থেকে বাড়তি দরে কিনে আনতে হচ্ছে। তাই বাজারে প্রভাব পড়েছে। ২০ দিন পরে বোরো মৌসুমের চাল বাজারে আসবে। এই মৌসুমে অন্য মৌসুমের তুলনায় বেশি ধান উৎপাদন হয়। আশা করছি, নতুন চাল বাজারে এলে দাম কমে আসবে। ভারত, মায়ানমার, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আসছে। অন্যথায় চালের বাজার আরও অস্থির হয়ে যেত।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য সূত্রে জানা যায়, জুলাই থেকে মার্চ মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত দেশে চার লাখ ২২ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। চার দেশ থেকে আমদানি চুক্তি করা হয়েছে ৯ লাখ মেট্রিক টন। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে যেখানে গত অর্থবছরে চাল আমদানির পরিমাণ শূন্য ছিল, সেখানে এ অর্থবছরের বিগত নয় মাসে দুই লাখ ৮৬ হাজার টন চাল এসেছে। এছাড়াও সরকারের গুদামে এখন মজুত রয়েছে ৯ লাখ ২৪ হাজার টন চাল। চট্টগ্রাম বন্দর বাদেও মোংলা বন্দর ও বেনাপোল, হিলি ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়েও চাল আমদানি হচ্ছে। সবশেষ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৩ এপ্রিল ভারত থেকে ১০ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল পৌঁছেছে।

এসআই

Wordbridge School
Link copied!